মোঃ নাজমুল ইসলাম সবুজ, শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের শরণখোলায় মহান ১৬ ই ডিসেম্বর উদযাপনকে কেন্দ্র করে উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে অনৈতিকভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের জনগণ। ২০ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার রায়েন্দা বাজারের পাঁচ রাস্তার আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সামনে সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনিক সেন্টারের মালিকরা জানায়, গত ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে শরনখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজি সেন্টারের মালিকদেরকে এবং বাজারে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নামে চিঠি ইস্যু করা হয়।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহের কার্যালয়ের উপসহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল তাদেরকে জানায় ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতি ৫০ হাজার এবং প্যাথলজিস্ট এর মালিকদের ৩০ হাজার করে বিজয় দিবস উপলক্ষে টাকা দিতে হবে। পরে বিষয়টি নিয়ে ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি সুন্দরবন ক্লিনিকের মালিক মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজ ক্লিনিকের মালিক মোঃ জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ ছয় জন ব্যবসায়ীরা ইউএনওর সাথে দেখা করে পরে তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ক্লিনিক প্রতি ৩০হাজার এবং প্যাথলজির মালিকদের ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করে।
পরে তারা ইউএনওর উপসহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবালের কাছে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা জমা দেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বালি উত্তোলনকারী ড্রেজার মালিকরা জানায় তারাও অনেক টাকা বাধ্য হয়ে চাঁদা দিয়েছে।
অন্যদিকে রায়েন্দা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত দিনে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অনুদান দিলেও এবছর ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ঘটিয়েছে ইউএনও ও তার অফিস সহকারী ইকবাল হোসেন। রায়েন্দা বাজার কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফাইজুল হক বলেন ফার্মেসী প্রতি এক হাজার টাকা করে ইউএনও’র অফিস সহকারী ইকবাল নির্ধারণ করে দিলেও তারা কিছু টাকা নিয়ে তার কাছে গেলে ওই অফিস সহকারী বলেন স্যার যেভাবে বলেছে সেই ভাবে টাকা না দিলে নেওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপসহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল বলেন, কারো কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করা হয় নাই। যে যেভাবে খুশি হয়ে দিয়েছে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তা শুধু নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার জন্য কারো কাছ থেকে জোর করে বা ধার্য করে কোন চাঁদা আদায় করা হয়নি। যে যা খুশি মনে দিয়েছে সেটাই তার উপসহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন গ্রহণ করেছে।
এ ব্যাপারে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহম্মেদ কামরুল হাসান বলেন, তিনি বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছেন। তবে খতিয়ে দেখে সত্যতা প্রমানিত হলে বিধিগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।