ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গতকালের রাত শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারের ঘোষণা নিয়েই ব্যাপক বিক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে পুনরায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতা ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা ‘বুলডোজার মিছিল’ ও ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির আহ্বান জানায়।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল রাত ৯টায় শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারের ঘোষণা দেয়ার পর, সোশ্যাল মিডিয়াতে উত্তেজনা বেড়ে যায়। বিকেলে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্ট শেয়ার করেন, আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সন্ধ্যা সাতটার পর এক পোস্টে ঘোষণা করেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমিমুক্ত হবে।”
রাত আটটার আগেই বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জড়ো হতে শুরু করে। রাত আটটার দিকে, তারা শেখ মুজিবুর বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে বাড়ির ম্যুরালসহ বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর শুরু করে। এরপর, রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বাড়ির তৃতীয় তলায় আগুন জ্বলে ওঠে, যা তীব্রতায় ঢলে পড়ে। রাত ৯টায় বিক্ষোভকারীরা লাঠি ও শাবলের আঘাতে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙা শুরু করে, এবং সাময়িকভাবে সেনাবাহিনীর একটি দল হাজির হলেও মিরপুর রোডের দিকে প্রস্থান করে।
রাত ১০টার দিকে বিক্ষোভকারীরা বাড়িটির বিভিন্ন অংশ ভাঙার চেষ্টা করে ও সামনের সড়কে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন। একই সাথে, ধানমন্ডি লেকের পাশে খোলা এলাকায় প্রজেক্টরের সাহায্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়, যা গত ৫ আগস্টের ঘটনার স্মৃতিকে নতুন করে জাগিয়ে দিয়েছে।