ভারতের পার্লামেন্টে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ মানচিত্র নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই বিতর্কের জেরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শংকর সরাসরি তুরস্কের দিকে আঙুল তুলেছেন। ভারতের ক্ষমতাসীন মোদি সরকার দাবি করেছে যে তুরস্কের মদদে এই মানচিত্রের প্রচার হচ্ছে, যা নিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের লোকসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনের সময় এক বিজেপি সাংসদ অভিযোগ করেন যে বাংলাদেশে তুরস্কের প্রভাব বাড়ছে। তিনি ‘সালতানাত-ই বাংলা’ নামে একটি ইসলামিক সংগঠনের কথা উল্লেখ করেন, যা একটি তুরস্কভিত্তিক এনজিওর সমর্থনে পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর পার্লামেন্টে জানান, এই সংগঠনটি একটি বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো এবং মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন যে এই মানচিত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রদর্শনীতেও দেখানো হয়েছিল।
তবে এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মধ্যযুগীয় বাংলার একটি মানচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছিল। এর সঙ্গে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামে কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা জড়িত ছিল না। এছাড়া, ‘সালতানাত-ই বাংলা’ নামে কোনো সংগঠন বাংলাদেশে সক্রিয় নেই বলেও বাংলাদেশ সরকার ভারতকে নিশ্চিত করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর বলেন, মোদি সরকার জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের দিকেও নিবিড় নজর রাখছে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশকে ঘিরে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। এই বিতর্ক রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর, যা দক্ষিণ এশীয় ভূরাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।