দিনাজপুরের বিরামপুরে খিয়ারমামুদপুর গ্রামে বিস্তৃত ৬০০ বিঘার শাপলার বিল এখন দর্শনার্থীদের কাছে এক অনন্য ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। চোখ যতদূর যায়, দেখা মেলে শুধু সাদা শাপলার সমারোহ—মনে হয় যেন ফুলের বিছানা।
প্রতিদিন শত শত মানুষ নৌকা চড়ে বিলের ভেতর ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। কারও কাছে এটি প্রকৃতির সান্নিধ্যে শান্তি খোঁজার জায়গা, কারও কাছে আবার অবিশ্বাস্য এক ফটোজেনিক স্পট।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বিলটির পশ্চিমাংশ আমরুল বিল ও পূর্বাংশ কাটলা বিল নামে পরিচিত। বিলে শুধু শাপলা নয়, কই, মাগুর, টাকি, পুঁটিসহ নানা প্রজাতির মাছও পাওয়া যায়। দর্শনার্থীরা অনেকে ফেরার পথে ছোট মাছ কিনে নিয়ে যান।
এ বিলে নৌকা চালানোয় ব্যস্ত জেলে আর স্থানীয় শিশুরাও। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুরাদ প্রতিদিন সকাল-বিকালে নৌকা চালিয়ে দর্শনার্থীদের ঘুরিয়ে দেখায়, আয় হয় ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। পড়াশোনার পাশাপাশি এই আয়ে তার সংসারে সাপোর্ট আসে।
তবে শাপলার সৌন্দর্য রক্ষায় স্থানীয়দের দুশ্চিন্তাও আছে। অনেকে ফুল তুলে নিয়ে যাচ্ছেন, এতে নষ্ট হচ্ছে বিলের প্রাকৃতিক শোভা। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বিল পরিদর্শন শেষে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে। স্থানীয় ইউপি সদস্যও জানিয়েছেন, ফুল ছিঁড়লে জরিমানার বিধান রাখা হবে।
দর্শনার্থী নাসরিন আক্তারের ভাষায়, “শাপলার বিছানা যেন ফুলের গালিচা। এমন দৃশ্য কাছ থেকে না দেখলে বোঝা যায় না।” সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়া ছবি ও ভিডিওই এখন হাজারো ভ্রমণপিপাসুকে টেনে আনছে এই বিলের শাপলা দেখতে।