ঝিনাইদহ প্রতিনিধি।
ঝিনাইদহে অভাবের তাড়নায় সদ্য প্রসূত সন্তানকে দত্তক দিয়েছেন এক মা। বিনিময়ে মিলেছে হাসপাতালের বিল মওকুফ ও নগদ ৬৫ হাজার টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মহেশপুর উপজেলার নেপার মোড়ের পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, মহেশপুরের যাদবপুর ইউনিয়নের আনছার মোড়ের মৃত আলামিনের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন প্রসবের পর আর্থিক সংকটে পড়েন। হাসপাতালের বিল শোধ করতে না পারায় তিনি সন্তানকে দত্তক দিতে রাজি হন। এ ঘটনায় সহযোগিতা করেন হাসপাতালের নার্স ইসমোতারা।
বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হেলেনা আক্তার নিপার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। অভিযানে হাসপাতালের কাগজপত্রে ত্রুটি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ পাওয়ায় মালিক সেলিম রেজা বাবুকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া শিশু বিক্রির সহযোগিতাকারী নার্স ইসমোতারাকে পুলিশ আটক করে, তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
সুমাইয়া খাতুন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর বাবার বাড়ি কিংবা শ্বশুরবাড়ি কোথাও ঠাঁই হয়নি তার। বৃদ্ধা নানির বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে গর্ভকাল পার করতে হয়েছে। অভাব-অনটনের কারণে সন্তান মানুষ করার সামর্থ্য ছিল না। তাই সন্তানকে দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “যারা দত্তক নিয়েছে তাদের আমি চিনি না, শুধু শুনেছি তাদের বাড়ি কুমিল্লায়।”
অন্যদিকে, হাসপাতালের মালিক সেলিম রেজা বাবু দাবি করেন, সন্তান দত্তক দেওয়ার ঘটনার জন্য তিনি দায়ী নন।