1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
অভিমানী বাচ্চু মণ্ডল ২৮ বছর পরে ফিরলো পরিবারে - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যুবদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, পদত্যাগ করলেন ৯ ছাত্রদল নেতা ৪৫ বছর ইমামতি শেষে রাজকীয় বিদায়, মসজিদ কমিটির ব্যতিক্রমী আয়োজন কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির নব নির্বাচিত সভাপতি খায়ের,সম্পাদক সাইদুর স্ত্রীকে খুন করে স্বামীর আত্মহত্যা আমাদের কেনা যাবে না-সাতক্ষীরায় হুঁশিয়ারি দিলেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শ্বশুরের হাতে জামাতার শিরশ্ছেদ, খণ্ড-বিখণ্ড দেহ উদ্ধার নওগাঁয় নাতির মরদেহ উদ্ধার, শোক সইতে না পেরে দাদার মৃত্যু মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডে সরকার মবকে প্রশ্রয় দিচ্ছে- তারেক রহমান মিডফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যা ও দেশজুড়ে সহিংসতার প্রতিবাদে গোবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন দৌলতপুরে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুটপাট, মাইক্রোবাসে আগুন, ৩ মোটর সাইকেল ভাংচুর

অভিমানী বাচ্চু মণ্ডল ২৮ বছর পরে ফিরলো পরিবারে

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১
  • ৪২৭ জন খবরটি পড়েছেন

বাচ্চু মণ্ডল (৬৪)। কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পলাশপুর গ্রামের মৃত কান্দুরা মাহমুদ মণ্ডলের ছেলে। তিনি ২৮ বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ঘর ছেড়ে ঠাঁই নিয়েছিলেন যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদে। কিন্তু কেউ তার এই ঠিকানা জানতো না।

অভয়নগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মিলে মিশে দীর্ঘ ২৮ টা বছর পার করেছেন  তিনি। অবশেষে সন্ধান পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার রাতে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন। অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিলের মধ্যস্ততায় সব ইউপি সদস্য, সাংবাদিক ও সুধীজনদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাচ্চু মণ্ডলকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘ ২৮ বছর সুন্দলী ইউনিয়নে বসবাস করেছেন বাচ্চু মণ্ডল। 

তিনি বলেন, স্ত্রী জাহেদা বেগমের ওপর অভিমান করে ৩৬ বছর বয়সে আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি। বিভিন্ন যানবাহনে করে যশোর মণিহার সিনেমা হলের সামনে পৌঁছাই। সেখান থেকে অভয়নগরের নওয়াপাড়া বাজার হয়ে সুন্দলী ইউনিয়নের সুন্দলী বাজারে পৌঁছলে রাত হয়ে যায়। এ সময় ওই ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের নগেন্দ্রনাথ রায় আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে খাওয়া-থাকার শর্তে তার কৃষিজমি ও বাড়ির কাজ করতে শুরু করি। 

প্রায় ৩ বছর পর ওই ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মুকুন্দ মল্লিক আমাকে তার বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেন। সেখানে ২ বছর থাকার পর একই গ্রামের চারু মল্লিকের বাড়িতে চলে যাই। ২০০৬ সালে সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিকাশ মল্লিক ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বাচ্চু পরিবহন লেখা একটি ভ্যান আমাকে উপহার দেন। যে ভ্যান চালিয়ে আমি জীবিকা নির্বাহ শুরু করি।

পরবর্তীতে আমাকে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ দেয়া হয়। সেই সময় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ শেখর বিশ্বাস আমাকে তার বাড়িতে থাকতে দেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালে সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে বসবাস করার সুযোগ করে দেন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। সেই থেকে অদ্যাবধি আমার ঘরবাড়ি সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদ। 

দুই চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়া জল মুছে বাচ্চু মণ্ডল আরও বলেন, আমার মা-বাবা দুজনের কেউ বেঁচে নেই। চার ভাইয়ের মধ্যে আমি সেজো। স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়-বন্ধুদের ফেলে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে আমি সনাতন ধর্মের মানুষের সঙ্গে বসবাস করেছি। এ ইউনিয়নে ৯৯ শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। তারা আমাকে তাদের ভাই হিসেবে সম্মান ও শ্রদ্ধা করেছে। থাকতে দিয়েছে, ভালো খেতে দিয়েছে, ভালো ব্যবহার করেছে। কখনো অন্য ধর্মের মানুষ হিসেবে আমাকে ঘৃণা করেনি। আমি সুন্দলী ইউনিয়নবাসীর কাছে ঋণী। বাড়ি ফিরে গেলেও মনের টানে অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নে সপরিবারে বেড়াতে আসবেন বলে তিনি জানান। 

বাচ্চু মণ্ডলের ভাইপো শফিকুল ইসলাম জানান, চাচা নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। একপর্যায়ে চাচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। সম্প্রতি আমাদের এলাকার গ্রামপুলিশ অসিত বিশ্বাসের মাধ্যমে চাচার সন্ধান মেলে। রাতেই চাচাকে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হয়েছি। 

তিনি আরও জানান, চাচি অন্তঃসত্ত্বা থাকতে চাচা নিখোঁজ হয়েছিলেন। বর্তমানে জাহিদুল ইসলাম নামে চাচার একটি ছেলে রয়েছে। তার বয়স এখন প্রায় ২৭ বছর। পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা চাচাকে নিয়ে যাচ্ছি। এই এলাকার মানুষ সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। 

সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল জানান, বাচ্চু মণ্ডলের পরিবার আছে এমন কথা তিনি কোনদিন কাউকে বলেননি। দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে তিনি আমাদের ইউনিয়নে রয়েছেন। ২০১০ সাল থেকে পরিষদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থাকতেন। খুব ভালো মনের মানুষ তিনি। সবাই তাকে বাচ্চু ভাই বলে ডাকত। তবে ২৮ বছর পর মানুষটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা আত্মতৃপ্তি পেয়েছি।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews