স্টাফ রিপোর্টার।।
বেসরকারি হাইস্কুল সরকারিকরণ হলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছিলেন সরকারি হওয়া অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীগণ।
স্কুল সরকারি হওয়ার পর বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরি ১৯৮৩বিধির আলোকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। অ্যাডহক নিয়োগ পেয়ে বিদ্যালয়ে কর্মরত সিনিয়র শিক্ষকরা হয়ে যান সহকারী শিক্ষক। তাদের বেতনস্কেল নবম গ্রেড থেকে নামিয়ে দশম গ্রেডে দেয়া হয়। সরকারি সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে অনেকেই ভুলে যান সিনিয়র শিক্ষক পদ বা বেতন গ্রেডের কথা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নওয়াপাড়া শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে গত ২০১৭সালের ২৩আগস্ট তারিখে সরকারিকরণ করা হয়। বিদ্যালয়টি সরকারিকরনের প্রজ্ঞাপনের পর বিদ্যালয়ে কর্মরত ২২জন শিক্ষক ও ৫জন কর্মচারীকে অ্যাডহক নিয়োগ দেয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অ্যাডহক নিয়োগ লাভের পর শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি শিক্ষক-কর্মচারী পদে যোগদান করে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় সরকারি নিয়োগ লাভের ৫বছর পার হলেও তাদের চাকুরী এখনও পর্যন্ত নিয়মিতকরণ হয়নি।
শিক্ষকদের চাকুরি নিয়মিতকরণ না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন পিআরএল-এ যাওয়া ৩জন শিক্ষক। দীর্ঘদিন অর্থাৎ ২-৩বছর ধরে বেতনভাতা না পেয়ে তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে চলেছেন।
গত ২০২০সালের ২১জানুয়ারি তারিখে পিআরএলএ যাওয়া শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন শনিবার দুপুরে কাঁদতে কাঁদতে জানান, বেসরকারি চাকুরি সরকারি হয়েও কোন লাভ হয়নি। একটানা আড়াই বছর বিনা বেতনে থাকায় পরিবারে নেমে এসেছে অশান্তি। দীর্ঘদিন বেতনভাতা বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, দীর্ঘ ৩৩বছর একটানা শিক্ষকতা করেও এখনও পর্যন্ত তার চাকুরি নিয়মিতকরণ না হওয়ায় তার বেতনভাতা রয়েছে বন্ধ। অপর দুই শিক্ষক মো. শাফায়েত হোসাইন ও সুনীল কুমার দাসের অবস্থাও একই। তারা দুইজনও পিআরএল-এ গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বেতনভাতা থেকে রয়েছেন বঞ্চিত।
পিআরএল-এ যাওয়া শিক্ষক মো. শাফায়েত হোসাইন জানান, আসন্ন ঈদুল ফিতরে কিভাবে সংসার চালাবো সেটা বুঝতে পারছি না। আমি খুব কষ্টে আছি।
বিষয়টি সম্পর্কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, চাকুরি নিয়মিতকরণ না হওয়ায় পিআরএল-এ যাওয়া তিন শিক্ষকের বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ে কর্মরত সকল শিক্ষকদের চাকুরি নিয়মিতকরণের ফাইল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে রয়েছে। কবে শিক্ষকদের চাকুরি নিয়মিতকরণ হবে সে বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারেন নি।