আজিজুল ইসলাম।
আজ বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী, সমাজ সেবক ও ওষুধ ব্যবসায়ী শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন সাহার প্রয়াণ দিবস। ২০০৭ সালের ২৩ নভেম্বর পরিবারপরিজন ,সহকর্মী এবং নারিকেলবাড়িয়ার আপমর জনসাধারণকে শোকসাগরে ভাসিয়ে অমৃতলোকে পাড়ি দেন। তাঁর পরিবারের সকল সদস্য,এলাকাবাসী সহকর্মী ও অগনিত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আজকের দিনটি গভীর দুঃখ ও বেদনার দিন।
মাস্টার চিত্ত রঞ্জন সাহা যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯২৫ সালে জন্ম গ্রহন করেন।
মাস্টার চিত্ত রঞ্জন সাহা একজন অতিসাধারন মানুষই ছিলেন। অনেক শিক্ষকের মতো একজন শিক্ষক ছিলেন তিনি। যে সময় তিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছিলেন সে সময় খুব কম মানুষই শিক্ষকতার পেশা গ্রহণ করতেন। যারা চিন্তা-চেতনায় অগ্রসর, যারা স্বপ্নবাজ, যারা সমাজকে আলোকিত করার কথা ভাবতেন, তেমন লোকগুলোই শিক্ষকতার পেশা অবলম্বন করতেন।
সর্বজন শ্রদ্ধেয় চিত্ত রঞ্জন সাহা একটানা ৪২ বছর বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়ায় নিজ গ্রামে এলাকার সবচেয়ে পূরাতন ঐতিহ্য সম্পন্ন নারিকেল বাড়ীয়া হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। নারিকেল বাড়ীয়া এলাকায় বড় স্যার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
অত্যন্ত দক্ষ নাট্যশিল্পী চিত্ত রঞ্জন সাহা মহাশয় শিক্ষকতার পাশাপাশি নারিকেলবাড়িয়া বাজারে একটা ওষুধের দোকান চালাতেন এবং বিভিন্ন সমস্যায় মানুষ কে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করতেন। সদা হাস্যোজ্জ্বল মিষ্টভাষী মিস্টার সাহা ১৯৪৬ সালে ভাবনহাটি গ্রামের কনক প্রভা সাহার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মৃত্যু কালীন সময় পর্যন্ত অত্যন্ত সুখী দম্পতি ছিলেন দুজনে।
৮২ বছরের এক পরিপূর্ণ জীবনযাপন করেমাস্টার চিত্ত রঞ্জন সাহা ২০০৭ সালের ২৩ নভেম্বর ভারতের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে চিকিৎসারত অবস্থায় কার্ডিও এট্যাকে ইহলোক ত্যাগ করে পরলোকে পাড়ি জমান। মৃত্যু কালীন সময়ে সৎ ও পরোপকারী চিত্ত রঞ্জন সাহা ও কনক প্রভা সাহা তাদের চতুর্থ ছেলে ভারত বর্ষের এক বেসরকারি ব্যাংকের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা প্রীতিশ সাহার সঙ্গে ছিলেন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর অত্যান্ত প্রিয়ভাজন শ্রদ্ধ্যেয় বড় স্যার চিত্ত রঞ্জন সাহা মৃত্যুকালে স্ত্রী,৫ ছেলে ও ১ মেয়ে এবং অগণিত গুণগ্রাহী রেখে যান।
চিত্ত রঞ্জন সাহার একমাত্র মেয়ে রেখা রানী সাহা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে , বড় ছেলে ডাঃ অচিন্ত্য সাহা ভেটেরিনারি দপ্তরে এবং মেঝ ছেলে অনাদী সাহা যশোর সরকারি সিটি কলেজে পূর্ণ সময় দক্ষতার সঙ্গে কাজ শেষ করে এখন অবসর কালীন সময় কাটাচ্ছেন। সেজ ছেলে অচ্যুত সাহা ভারতবর্ষে এক বেসরকারি সংস্থায়, চতুর্থ ছেলে প্রীতিশ সাহা ভারতবর্ষে এক বেসরকারি ব্যাংকে এবং ছোট ছেলে অপূর্ব সাহা যশোরে এক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত আছেন।
অনন্তের এ মহান জ্ঞানসাধকের প্রয়াণ দিবসে তাঁকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
তথ্য-প্রীতিশ সাহা