উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেও সুফল পাচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ
এ আর রাকিবুল হাসান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলাধীন দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৩৬ বছরের বেশি সময় ধরে গরু ছাগলর হাট বসছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া, বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশ। খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ।
সপ্তাহে ২ দিন (মঙ্গলবার ও শুক্রবার) পশুরহাট বসানোর কারণে মঙ্গলবার ৪র্থ ঘন্টার পর স্কুল ছুটি দিতে বাধ্য হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ । শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন থেকে দাবী জানিয়ে আসলেও স্কুল মাঠ থেকে হাট সরিয়ে নেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ প্রশাসন ও হাট ইজারাদার গায়ের জোরে হাট চালিয়ে আসছে। তিনি আরো জানান, হাট সরানোর জন্য গেট (প্রধান ফটক) বন্ধসহ নানা উদ্দ্যোগ নিয়ে হাট ইজারাদারের কাছে কয়েকবার অপমানিত হয়েছি।
এবছর ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাক মূল্যে হাটের ইজারা পেয়েছেন দূর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খায়রুল কবীর বাবলু । তিনি ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ আশা করেছিলেন এবার হাট সরানো যাবে। কিন্তু তার নীরব ভুমিকা কর্তৃপক্ষকে আশাহত করেছে।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসলে শিক্ষার্থীরা হাটটি সরানোর দাবী জানায়। তিনি হাট সরানোর আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। অথচ হাট বাজার নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি জায়গা ছাড়া অন্য কোন জায়গায় হাট বসানো যাবে না। সেখানে কিভাবে স্কুলের মাঠে পশুর হাট বসিয়ে প্রশাসন রাজস্ব আদায় করছে তা রীতিমত অবাক করেছে এলাকার বিশিষ্ট জনদের।
এবছর ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাক মূল্যে হাটের ইজারা পেয়েছেন দূর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খায়রুল কবীর বাবলু । তিনি ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি।
স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকদের অভিযোগ এসএসসি কেন্দ্র ও জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হওয়া সত্বেও গরু ছাগলের হাটের কারণে স্কুলের লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে হাটটি অনত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা জোর দাবী জানিয়েছেন।
অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থী লুৎফা বেগম, নবম শ্রেনীর মাহাদীন, আহসান, নাফিজুল, তাসিন, নীরব ও জামিউল ইসলাম জানায় স্কুল মাঠে হাট বসানোর কারণে গরু ছাগলের মল মুত্রের দুর্গন্ধে এবং মাইকের উচ্চ শব্দে ক্লাসে থাকা যায় না। মাঠে খেলাধুলা করতে পারি না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার দুঃখ প্রকাশ করে জানান, প্রশাসন ও ইজারাদারের ইচ্ছায় হাট বসছে। হাটটি সরানোর জন্য বহুবার উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেও সুফল পাইনি। স্কুল গেট বন্ধ করে হাট ঠেকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ ও অপমানিত হয়েছি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, দূর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হাট ইজারাদার খায়রুল ইসলাম বাবলু জানান, অনেক বছর ধরে বিদ্যালয় মাঠে হাট বসছে। এমনতো নয় যে নতুন ভাবে হাট বসানো হয়েছে। প্রশাসন হাটের জায়গা দিলে হাট সেখানে চলে যাবে। তবে হাট সরিয়ে নেয়ার জন্য আমার চেষ্টা থাকবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মোঃ তারিকুল ইসলাম জানান, শুনেছি অনেকদিন ধরে স্কুল মাঠে পশুর হাট বসছে। ইউএনও স্যারের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন রাংসা জানান, স্কুল মাঠে হাট বসানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিযে এবিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।