স্টাফ রিপোর্টার।
অভয়নগর উপজেলায় স্ট্যাম্প কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। দেড় মাস ধরে এ উপজেলায় ১শ’ টাকার স্ট্যাম্প সংকট দেখা দিয়েছে। ১শ’ টাকার স্ট্যাম্পে জন্য নেওয়া হচ্ছে ২শ’ টাকা এমন অভিযোগ রয়েছে।
বুধবার উপজেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও দলিল লেখক সমিতির চত্বরে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। জানা যায়, উপজেলার নওয়াপাড়া দলিল লেখক সমিতি চত্বর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কিছু অসাধু স্ট্যাম্প ভেন্ডার এমন সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। সেবাগ্রহীতাদের পকেট থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। ৫০ টাকার স্ট্যাম্পের জন্য গুণতে হচ্ছে ৭০ টাকা। ১শ’ টাকার ননজুুডিসিয়াল স্ট্যাম্প কিনতে হচ্ছে ১৫০ থেকে ২শ’ টাকা দিয়ে। সব ধরনের স্ট্যাম্প কিনতে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে।
সেবাগ্রহীতারা জানান, দলিল নিবন্ধন, জমির দলিল, চুক্তিপত্র, নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিট, হলফনামা, বন্ধকনামার চুক্তিপত্র, মালামাল খালাস আদেশ, শুল্ক বন্ড, শেয়ার বরাদ্দ, মামলা মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন কাজে স্ট্যাম্প ব্যবহার বাধ্যতামূলক। আর এই সুযোগে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে স্ট্যাম্প বিক্রি করছেন কিছু অসাধু স্ট্যাম্প ভেন্ডার।
উপজেলার সিদ্ধিপাশা গ্রামের আহাদ আলী বলেন, সম্প্রতি আমি একটি মোটরসাইকেল কিনেছি। মালিকানা লিখে নিতে ২শ’ টাকার স্ট্যাম্প দরকার। নওয়াপাড়া দলিল লেখক সমিতির চত্বর থেকে ১শ’ টাকার দুটি স্ট্যাম্প ৪৫০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হয়েছি। এই বাড়তি ২৫০ টাকা আমার মতো গরিব কৃষকের কাছে একবেলা ভাতের দাম।
স্ট্যাম্প কিনতে আসা ফজর আলী শেখ, হান্নান রহমান, রহমত আলী বলেন, নতুন দোকান ভাড়া নিয়েছি। চুক্তিপত্র করতে ৩শ’ টাকার তিনটা স্ট্যাম্প লাগবে। দুদিন ধরে ঘুরে ঘুরে পাইনি। আজকে রবিউল ইসলাম বাবুর কাছে গেলে তিনি জানান দাম বেশি পড়বে। তিনটা স্ট্যামে ৬শ’ টাকা চাওয়া হয়েছে। স্ট্যাম্প না কিনে ফিরে এসেছি।
নওয়াপাড়া এলাকার মনির শেখ বলেন, নওয়াপাড়ায় না পেয়ে যশোর থেকে ৩টি স্ট্যাম্প কিনেছি ১৩০ টাকা প্রতি ৩ শত ৯০ টাকা দিয়ে। নওয়াপাড়া দলিল লেখক সমিতির আন্ডারে ৯ জন স্ট্যাম্প ভেন্ডার রয়েছেন। সেখানে স্ট্যাম্প তোলেন মাত্র সাত জন।
স্ট্যাম্প ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বাবু বলেন, এই এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় স্ট্যাম্প সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে ১শ’ টাকার স্ট্যাম্প ২শ’ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এই স্ট্যাম্প গুলো বাইরের থেকে এনে দেওয়া হয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহে সব ঠিক হয়ে যাবে।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানান, স্ট্যাম্প সংকট বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে। ভেন্ডাররা বাইরে থেকে স্ট্যাম্প এনে বিক্রি করছেন। স্ট্যাম্পগুলো আনতে খরচ হয়। যার কারণে অনেক সময় বেশি দামে স্ট্যাম্প বিক্রি করতে হয়। তাছাড়া সমিতির আন্ডারে যারা বেশি দামে স্ট্যাম্প বিক্রি করবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) থান্দার কামরুজ্জামান জানান, স্ট্যাম্পের দাম বেশি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংকট থাকলেও দাম বেশি নেওয়া যাবে না। এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলেই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে স্ট্যাম্প।