আদালত প্রাঙ্গণে মারধরের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশের পাহারায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
জানা গেছে, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে। পাশাপাশি তার হার্টে বাইপাস সার্জারিও করা আছে। আদালত চত্বরে মারধরের ঘটনায় বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারধরে তার একটি অণ্ডকোষ ফেটে গেছে। এ ছাড়াও শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছে।
শনিবার দুপুরে সাবেক এই বিচারপতিকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১০ এর আদালতে হাজির করে পুলিশ। তবে পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর পরপরই তাকে কিল-ঘুষি মারার ঘটনা ঘটে। একই সময় তাকে লক্ষ্য করে অনেকে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন। পরে শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
পরবর্তীতে বিকেল ৫টার দিকে শহরতলীর বাদাঘাট এলাকায় কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হলে সেখানকার সহকারী সার্জন মানিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ তাকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠায়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাতে ভারতে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কানাইঘাট সীমান্তে আটকের পর স্থানীয় জনতার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন মানিক। তার সেই বক্তব্যটি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ওই সময় ঘটনাস্থলে থাকা একজন তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেন পালাতে চেয়েছিলেন। উত্তরে সাবেক এই বিচারপতি বলেন, প্রশাসনের ভয়ে পালাতে চেয়েছিলাম। তখন অপরপাশ থেকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি তো অনেক জুলুম করেছেন।’ এমন প্রশ্নের জবাবে মানিক বলেন, ‘আমি কোনো জুলুম করিনি।’
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী দনা এলাকা দিয়ে পালানোর সময় সঙ্গে করে ৭০ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। আটকের সময় একটি ভিডিও রেকর্ড করা হয়। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।