মোঃ নাজমুল ইসলাম সবুজ শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি। বাগেরহাটের শরণখোলায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রেমের প্রস্তাব ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে সহকারি শিক্ষিকা নাজমা আক্তার প্রধান শিক্ষককে রুমে তালা দিয়ে আটকিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯ টার দিকে শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের ৭৫নং উত্তর খোন্তকাটা মুকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘটনার সমাধান হয়।
ভূক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের ৭৫নং উত্তর খোন্তকাটা মুকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম অনেকদিন ধরে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সহকারি শিক্ষিকা নাজমা আক্তারের সাথে প্রেমের সর্ম্পক করার চেষ্টা করে এবং তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছেন। কিন্তু ওই শিক্ষিকা তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম প্রবাসে থাকা নাজমার স্বামীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তার সর্ম্পকে বিভিন্ন ধরনের কটুক্তি ও অপবাদ দেয় । স্বামীর কাছে এ কথা জানতে পারেন শিক্ষিকা নাজমা আক্তার।
এ ঘটনার জের ধরে নাজমা আক্তার ২০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে স্কুলে আসেন এবং প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে ঘটনার প্রতিবাদ করেন। কথাকাটাকাটির এক প্রর্যায় সহকারি শিক্ষিকা নাজমা সু-কৌশালে প্রধান শিক্ষককে রুমের মধ্যে তালাবন্দী করে ডাক চিৎকার শুরু করেন। তার ডাক চিৎকারে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও পাশ্ববর্তী এলাকার অভিবাভকরা ছুটে আসেন। এ সময় বিষয়টি জেনে অভিভাবকরা শরণখোলা থানা পুলিশ ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।
ঘটনার বিষয়টি শুনে দ্রুত স্কুলে ছুটে আসেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও শরণখোলা থানা পুলিশের একটি দল। পরে উভয়ের কাছ থেকে যাবতীয় ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিক ভাবে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামকে ১০ দিনের ছুটিতে পাঠান। তিনি সহকারী শিক্ষিকা নাজমা আক্তারকে খোন্তকাটা ইউনিয়নের ১০১নং জেডি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে প্রেরন করেন। এরপরে তিনি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে স্থানীয়দের আসস্থ করলে তারা স্কুল থেকে ফিরে যান।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক নাজমা আক্তার বলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে যোগদানের পর থেকে প্রধান শিক্ষক তাকে প্রেমের প্রস্তাবসহ যৌন নিপীড়ন করে আসছেন। কিন্তু বিষয়টি শিক্ষাকর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষাকর্মকর্তাদের অবহিত করলেও তিনি সু-বিচার পাননি।
প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জমিজমা সংক্রন্ত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মহল নাজমা কে দিয়ে এ ষড়যন্ত্র করিয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলে শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র বলেন, তাদের মধ্যে প্রেমের বিষয়টি শুনে উভয়কে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে দোষ প্রামানিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয় শরণখোলা থানা পুলিশের ইনচার্জ মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনা শুনে পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শিক্ষা বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইন গত ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদিপ্ত কুমার সিংহ বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন তাৎক্ষনিক ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।