1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
রাজনৈতিক দলগুলোর বোধদয় কবে হবে ? - Bdtelegraph24 | বাংলা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বৈষম্যমুক্ত দেশ ও জাতি গড়তে মুক্তিযোদ্ধাদের এগিয়ে আসার আহ্বান ড. মনিরুজ্জামান মণির সাদপন্থী খুনি সন্ত্রাসী কর্তৃক তাবলীগের সাথীদের হত্যার প্রতিবাদে শ্যামনগরে মানববন্ধন সামাজিক ও মানবিক কাজে বিশেষ অবদান রাখায় সেচ্ছাসেবীদের সংবর্ধনা  নওয়াপাড়া-পদ্মাসেতু দিয়ে ঢাকা রুটে ৪টি ট্রেন চালুর দাবি অভয়নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি কৃষকরাই দেশের মূল চালিকা শক্তি- টিএস আইয়ুব রাজনৈতিক দলগুলোর বোধদয় কবে হবে ? ফরিদপুরে নির্যাতিত কিশোরকে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা,আটক ২ বাঘারপাড়ায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিপুল সহ ৩০৮ আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীর নামে মামলা,আটক ৫ শ্যামনগরে পুলিশের অভিযানে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার

রাজনৈতিক দলগুলোর বোধদয় কবে হবে ?

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮ শেয়ার হয়েছে

।।মোঃ মাসুম বিল্লাহ।।

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। আদিম যুগে যখন মানুষ গুহা বাসি
ছিল। তখনও মানুষ গুষ্টিগতভাবে বসবাস করতে পছন্দ করত। নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্য সামাজিক বোধ
তৈরি না হলেও সামাজিকভাবে বসবাস করতে শুরু করেছিল। যদি এই সামাজিকতার বিষয়টি আধুনিক সময়ের একটা ধারণা এবং আধুনিক সময়ে বহুল প্রচলিত একটি বিষয়। কিন্তু যুগে যুগে মানুষ তার প্রয়োজন মেটাতে সঙ্গবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে চেয়েছে, সঙ্গবদ্ধ হয়ে বসবাস করে এসেছে। তাদের নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে, ব্যক্তি
স্বার্থে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে জীবন যাপনের সর্ব আধুনিক পদ্ধতি হচ্ছে রাষ্ট্র। রাষ্ট্র হচ্ছে এমন একটা পদ্ধতি যেখানে একটা ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে সকল মানুষ একটি ধারণার বসবতি হয়ে একত্রিত হবে এবং সকলে মিলেমিশে বসবাস করবে। আর সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নিয়ম তান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করা সরকার নির্দিষ্ট সময় পরে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হবে এবং পরিবর্তন ঘটবে ক্ষমতার। তারা এসে জনগণের স্বার্থে কাজ করবে। নিজেরা শ্রম দিবে কিছু যৎসামান্য সম্মানই পাবে এবং জনগণকে সেবা দিয়ে সেই রাষ্ট্রকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আধুনিক যুগে এসেও আমরা বিভিন্ন সময়ে শাসিত হয়েছি বিভিন্ন পরশক্তির কাছে। আমরা হয়েছি পরাজিত,
নির্যাতিত, শোষিত। ইতিহাস কথা বলে। সেই ইতিহাস কখনো পরাজিত হয়ে থাকতে চাইনি। তাই এদেশর মানুষ
বারবার বিদ্রোহ করেছে। আর বিদ্রোহের ফলশ্রুতিতে মানুষ অর্জন করেছে স্বাধীনতা। এজন্য ভৌগোলিক
সীমারেখাগুলো অনেক ছোট হয়ে এসেছে। বৃহৎ বৃহৎ রাষ্ট্রগুলো ভেঙ্গে ক্ষুব্ধ ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। যার
পরিণয় স্বরূপ একটা রাষ্ট্র সুন্দর এবং শৃংখলভাবে পরিচালিত হতে পারছে। সুষ্ঠ এবং সুন্দর জীবন ধারণের জন্য
যে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে, সেই জীবন ধারণের গল্পে মানুষ যখন কোন সরকারকে নির্বাচিত করে তখন তারা
ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে উপনীত হয়ে শাসনের স্টিম রোলার চালায়। তারা ক্ষমতার মূল উৎস জনগণকে উপেক্ষা
করে নিজেদের সর্বময় ক্ষমতা এবং কর্তৃত্বের অধিকারী মনে করে। আর তখনি তারা জনগণকে পাশ কাটিয়ে নিজের ইচ্ছা ও স্বার্থটাকে প্রাধান্য দিয়ে যে কোনো গর্হিত কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করে না।

১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগ ও পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় টানে আমরা একটা আলাদা ভূখণ্ডের সাথে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলাম এবং আমরা মনে করেছিলাম ধর্মের ভাই হিসেবে তাদের সাথে থাকবো। কিন্তু আমরা দেখেছি যে শুধুমাত্র ধর্ম দিয়ে এই যে দুইটা আলাদা ভূখণ্ডের মানুষকে এক করতে পারেনি। সুতরাং তাদের সংস্কৃতিগত ঐতিহ্য এখানে মুখ্যভূমিকা পালন করার পাশাপাশি শাসন, শোষণ, নির্যাতন এর জন্য পরবর্তীতে আন্দোলন,সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পড়ে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করেছি। এই বিজয়ের মূল লক্ষ্য ছিল আমরা স্বাধীন হব। আমাদের এই দেশের মানুষ হবে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী অর্থাৎ তারা যাকে নির্বাচিত করবে সেই বিজয়ী অংশ সরকার গঠন করে জনগণের ইচ্ছার বাস্তবায়ন করবে।

১৯৭০ নির্বাচনে জয়ী অংশের কাছে পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্ত না করার জন্যই ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা
যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে। যদি তারা সুষ্ঠ উপায়ে ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় এবং জনগণের দাবিকে স্বীকার করে ক্ষমতার পালাবদলটাকে মেনে নিত, ক্ষমতা হস্তান্তর করতো তাহলে হয়তো এই যুদ্ধ তখন হতো না। কিন্তু যখন স্বার্থ অন্বেষী গোষ্ঠী ক্ষমতার সুষ্ঠ বিধান করতে পারেনি, ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি তখনই আমাদের এই অংশের জনগণ রুষে ওঠে। তারা ধিক্কার দেয়, তারা প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। যার ফলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল যে এই দেশের মানুষ রাষ্ট্রপ্রধানকে নির্বাচন করবে এবং সে রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের জন্য কাজ করবে। জনগণকে সর্বময় ক্ষমতার মূল সত্তা মনে করে জনগণের সেবক হিসেবে থাকবে। কিন্তু ১৯৭১ সালের সেই স্বপ্ন অলীক থেকে গেল। স্বাধীনতার তিপ্পান্ন বছর অতিক্রম করেছে কিন্তু আমরা এখনো সেই শাসকগোষ্ঠীর যে মানসিক বিকাশ সেটাকে লক্ষ্য করেনি। যার ফলে ৫৩ বছর পরেও আমরা দেখেছি শাসকগোষ্ঠী তার ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত রয়েছে। পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর সাথে আমাদের যে দ্বন্দ্ব ছিল সে দ্বন্দ্ব আমরা স্বাধীন হওয়ার পরেও অতিক্রম করতে পারিনি। যারা শাসন ক্ষমতায় এসেছে তারা এই দ্বন্দ্বকে আরো ঘনীভূত করেছে।

২০২৪ সালের নতুন বাংলাদেশ স্বাধীনতার যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল তা কি জনগণ ভোগ করতে পারবে? আমরা এখনো
স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ স্বাদ উপলব্ধি করতে পারছি না। কেননা আমাদের দেশে যারা শাসকগোষ্ঠী বা শাসক শ্রেণীতে
এসেছে তারা শুধুমাত্র নিজেদেরকে ক্ষমতার মূল কেন্দ্রবিন্দু মনে করেছে। তারা জনগণকে অবহেলা করেছে জনগণকে উপেক্ষা করে নিজের মনগড়া মত এবং পথকে সবার উপরে চাপিয়ে দিতে চেয়েছে। যেটা আমাদের দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনেনি।

গত ৫৩ বছরে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে এবং যতগুলো সরকার এসেছে প্রত্যেকটা সরকার শুধু নিজের দলীয়
স্বার্থটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে। কোন সরকার এ দেশের জনগণের স্বার্থকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করেনি বরং তারা শুধু নিজের দলের স্বার্থ দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। নিজেদের একচ্ছত্র ক্ষমতার মালিক ভাবতে শুরু করে। ক্ষমতায় এসেছে তারা ভুলে গেছ এই দেশে রয়েছে বিভিন্ন দল মত শ্রেণী পেশার মানুষ। সার্বিকভাবে সকল মানুষকে ধারণ করে এমন কোন নীতি তারা গ্রহণ করেনি। যার জন্য যুগে যুগে আমাদের দেশে দাবী আদায়ে জীবন দিয়েছে, শহীদ হয়েছে। শাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আমরা জানি। তাই এদেশর সন্তানেরা যুগে যুগে রাস্তায় নেমেছে, যা ইতিহাসের পরতে পরতে লেখা আছে। তারা এসেছিল প্রতিবাদ করেছিল আর পতন হয়েছিল,
মনে হয়েছিল এর ফলে আর হয়তো কখনো এরকম স্বৈরশাসকের জন্ম হবে না। কিন্তু আমরা দেখেছি ক্ষমতার মূল
কেন্দ্রবিন্দুতে যিনি থাকেন সেই ব্যক্তিটি একটা সময় সেই স্বৈরশাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ক্ষমতার লিপ্সা এবং ব্যক্তি ক্ষমতার অধিকারী হয়ে তিনি ধরাকে সারা জ্ঞান করেন। যার জন্য ২০২৪ সালে আর একটি স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করতে হয়েছে। যদিও এই স্বৈরাশাসক বিভিন্ন পদ্ধতিতে নিজেকে সহিহ করে ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিলেন, তারপরে তার পদ্ধতি গুলো কতটুকু ভুল বা সঠিক ছিল সেটা হচ্ছে আমাদের বিবেচ্য বিষয়।

৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশের সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে অতি দ্রুত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এ সরকারের ছিল না কোন অভিজ্ঞতা। কিন্তু তারা জাতির ও এই দেশের কল্যাণের জন্য মহাদুর্যোগ কালীন সময়ে হাল ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যায় যুক্ত করেছেন। দুর্যোগ উত্তরণের কাজ করার জন্য তারা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আমরা স্বার্থন্বেষী মানুষ এখনো স্বার্থের লিপ্সায় লালায়িত। সাম্প্রতিক সময়ে দেখেছি বিএনপি বারবার চেষ্টা করেছে নির্বাচন দ্রুত করাতে। বিগত সরকারের কাছে তারা চেয়েছে যে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন এবং তারা নিজেরা নির্বাচনে যেতে। কিন্তু নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ কতটুকু সফলভাবে করতে পেরেছে বা তাদের দাবি পূরন হয়েছে এটা প্রশ্ন ছিল। তারা পারেনি, তাদের ক্ষমতা দিয়ে পারেনি, তাদের লোক বল দিয়ে পারেনি। সুতরাং তারা ছিল ব্যর্থ এবং বর্তমান সময়ে এসে সেই ব্যর্থ রাজনৈতিক দলগুলো তারা অনেক উচ্চবাচ্য করছে। কেননা তাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে যাওয়া।

যারা বর্তমান সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তাদের ক্ষমতার লিপ্সা নাই। যদি থাকতো তবে তারা এতোদিন কোন
রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত হতে পারতেন। কিন্তু তারা রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত হয়নি। শুধুমাত্র জনগণের কথা, এই দেশের অভাগা মানুষের কথা চিন্তা করে সংস্কার করতে চাচ্ছেন। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এই সংস্কারকে বুড়া আঙ্গুলী দেখিয়ে করতে চাচ্ছে দ্রুত নির্বাচন। তারা মনে করে নির্বাচন হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
নির্বাচনে যদি সব সমস্যার সমাধান হতো বিগত ৫৩ বছরে বহু নির্বাচন হয়েছে তাতে কোন সমস্যার সমাধান হয়নি।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার বদলে পিছিয়ে গেছে অনেক অনেক ক্ষেত্রে। মালয়েশিয়া স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যত
দ্রুত এগিয়ে গিয়েছে আমরা তত দ্রুত পিছিয়ে পড়েছি। বিশ্ব মানচিত্রে আমরা পিছিয়ে পড়া জাতিতে পরিণত হয়েছি। সুতরাং এর মূল কারণ বা এর দায় ছিল রাজনৈতিক দলগুলো। গত যে নির্বাচনগুলো হয়েছে এবং যে সরকার এসেছে তারা নিজস্ব চিন্তা ভাবনাগুলো বাস্তবায়ন করেছে।

২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এদেশের জনগণের মধ্যে একটা নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে, যে বাংলাদেশের
মানুষ একটা নতুন অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে নতুন ভাবে বিকশিত করবে তাদের নিজেদেরকে এবং নতুন একটা পন্থা
তৈরি করবে। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে যে শাসকগোষ্ঠী বসবে তারা কখনো সে ক্ষমতাকে অপব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ভিতরে মনে হচ্ছে তারা ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই তারা দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সকল ক্ষমতা গ্রহণকে অপরিহার্য মনে করছে এবং সকল সমস্যার সমাধান মনে করেছে। তারা মনে করেছে যে নির্বাচন হলে দেশের সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে নির্বাচন সকল সমস্যার সমাধান হলে এতদিন কেন সমাধান হলো না। এটা একটা বড় ধরনের প্রশ্ন থেকে যায়। সুতরাং নির্বাচন কোন সমস্যা সমাধান নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে, আজকে যারা সংস্কার করতে চেয়েছে তা এদেশের প্রত্যেকটা মানুষের দাবিকে বাস্তবায়ন করছে, কোন রাজনৈতিক দলের দাবি না।

সুতরাং এ সরকার ও তাদরে সংস্কারগুলো যদি ব্যর্থ হয় আরো ৫৩ বছর পিছিয়ে যাবে আমাদের বাংলাদেশ। এজন্য
এ দেশের সাধারণ মানুষ মনে করে যে রাজনৈতিক দলের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে সাধারণ জনগণের ইচ্ছা প্রতিষ্ঠিত
করা উচিত। রাজনৈতিক দল যত দ্রুত নির্বাচন দিতে বলছে তত দূরত্ব নির্বাচন না করে আমরা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংস্কার করতে হবে এবং এমন একটা পর্যায়ে রাষ্ট্রকে নিয়ে যেতে হবে যখন সেখান থেকে দুর্নীতি করার আর কোন সুযোগ থাকবে না। সকল রাজনৈতিক দলগণ মনে করছেন যে নির্বাচন হলে সব সমস্যার সমাধান হবে কিন্তু সকল সমস্যার সমাধান নির্বাচন দিয়ে এতদিনে হয়নি, হবেও না। এজন্য আমাদের আদর্শগত পরিবর্তন করতে হবে, পরিবর্তন করতে হবে কাঠামোগত, সংস্কার করতে হবে আমাদের রাষ্ট্রীয় কার্যবলি এবং সার্বিক বিধি-বিধানের। আর এই পরিবর্তন না করলে আমরা যতই নির্বাচন করিনা কেন তাতে জনগণের কোন সুফল বয়ে আসবে না। এ জন্য রাজনৈতিক দলকে বুঝতে হবে, আর জনগণ বুঝে গেছে যে রাজনৈতিক দল কি করতে পারে। সুতরাং রাজনৈতিক দলকে উপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

সরকারকে একটা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এদেশের মানুষ আর কোন ভুলের জন্য জনগণের এই বিজয়কে
ভূলুণ্ঠিত করতে চাচ্ছে না। ভুল পথে পরিচালিত করতে চাচ্ছে না এ দেশকে। এজন্য রাজনৈতিক দলকে সংযমের
পরিচয় দিতে হবে। আপনারা সমস্যার সমাধান করতে পারেন নাই, যার জন্য আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং আপনারা শুধু নির্বাচন নির্বাচন বলে যেটা করছেন সেটা নিজেদের জন্য সম্মান হানির কারণ। গত ১৬ বছর ধরে আপনারা অপেক্ষা করেছেন। ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে ছিলেন। আপনাদের ক্ষমতার লোভ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ১৬ বছর যেহেতু পারেননি হয়তোবা এই ছাত্র জনতা জীবন না দিলে আগামী চার বছর আপনার কিছুই করতে পারতেন না। শুধু আগামী চার বছর না হয়তো ৪১ সাল পর্যন্ত আপনারা কিছুই করতে পারতেন না।
আপনাদের ক্ষমতা আমাদের দেখা হয়ে গেছে। আপনাদের সেই ক্ষমতা ছিল না, থাকলে নেতাকর্মী নির্মম গণহত্যা,
গুম, খুন মত প্রকাশের স্বাধীনতা কুক্ষিগত করার পরেও কোন বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেননি। হ্যা এ আন্দোলনে
আপনাদের সীমাহীন ত্যাগ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। যার জন্য জনগণ আপনাদের এখনো পাশে রেখেছে এবং
ভবিষতে ক্ষমতাও দেবে। কিন্তু তাই বলে এতো তাড়াহুড়ো মেনে নেবে না।

স্রষ্টা এবং এ দেশের সাধারন মানুষ মিলে যে বিজয় অর্জন করেছে সে বিজয়কে আপনাদের শ্রদ্ধা করতে হবে।
আপনাদের ধৈর্য ধরতে হবে, অপেক্ষা করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আপনারা সময় দেন, যেন তারা
নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। পৌঁছানোর জন্য আপনারা সার্বিক সহযোগিতা করেন। এর আগে নির্বাচনে কথা
বলবেন না। বললে তা এ দেশের মানুষের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য
লজ্জাজনক বিষয় হবে। আপনাদের তথাকথিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যেহেতু কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি,
ভবিষ্যতে হয়তো হবেনা। এ সরকারকে এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে সময় দিন যেন আগামীতে যে সকল
নির্বাচন হবে তা সুষ্ঠ সুন্দর এবং আমাদের দেশের মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। সুতরাং আপনারা
রাজনৈতিক দলগুলো আরো সংযমী হন।

উপদেষ্টা পরিষদকে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে। রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে
আপনারা আসেননি। সুতরাং সাধারণ মানুষের চাওয়াকে উপলব্ধি করে তা বাস্তবায়নের জন্য যেটা করা উচিত সেটা
আপনাদের করতে হবে। এই সুযোগ হারালে আরো ৫৩ বছর অপেক্ষা করবে জাতি। তাহলে জাতি আপনাদের ধিক্কার দিবে। সে ধিক্কার থেকে আপনারা মুক্ত হন। আপনারা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করে যাবেন এই প্রত্যাশা থাকবে
আমাদের মত সাধারন মানুষের।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2022
Theme Customized By BreakingNews