২০১৬ সালে ওবামা-বাইডেনের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এনদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার ব্যর্থ অপচেষ্টা তুরস্কের সাধারন জনগণ নস্যাৎ করে দেয়। তুরস্কের ইতিহাসে যা যুগান্তকারী। এরদোয়ান ভিডিও বার্তায় সাড়া দিয়ে সেখানকার সাধারন জনগণ সক্রিয় অংশগ্রহন করে সামরিক অভ্যুত্থান থামিয়ে দেয় যা বিশ্বজুডে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। ২০২০ সালে মার্কিন নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেনের নির্বাচনী পূর্ববর্তী এক সাক্ষাৎকার ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সামরিক অভ্যুত্থান নয়, বরং কুর্দি অঞ্চলকে স্বাধীনতা দিয়ে দেশ সৃষ্টি করে এবং তুরস্কের রাজনৈতিক বিরোধী দলকে সহায়তাই যথেষ্ট। মজার ব্যাপার হলো ২০১৬ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন জো বাইডেন সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে সমবেদনা জানিয়ে টুইট করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, এরইমধ্যে বাইডেনের জয়ে তুরস্কের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা বাইডেনকে তুরস্কের কোনো রাজনৈতিক দল থেকে প্রথম অভিবাদন জানিয়েছে।
CHP leader @kilicdarogluk congratulates @JoeBiden and @KamalaHarris for their election victory. https://t.co/GZpXjuoCk8
— Özkan Yalım (@ozkan_yalim) November 8, 2020
তুরস্কের বিরোধী দলীয় নেতার টুইট বার্তা।
এবার চলুন, নিউ ইয়র্ক টাইমসে বাইডেনের দেয়া সাক্ষাৎকার দেখে আসা যাক-
স্বভাবতই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তুরস্ক জো বাইডেনকে সমর্থন দেয়নি। ট্রাম্পের এমন পরাজয়ে আঙ্কারা তাই কোনোভাবেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে না। কোনো সন্দেহ নেই, তুরস্কের বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশসনের পররাষ্ট্রনীতি কি হতে চলেছে তা নিয়ে। প্রশ্ন আসতে পারে, এরদোয়ান কি করবে এখন।
নিঃসন্দেহে বসে থাকবে না। সবচেয়ে বড় কথা, ২০১৬ সালের ব্যর্থ ক্যু এরদোয়ানকে হাজারগুন অভিজ্ঞ করে তুলেছে। দীর্ঘমেয়াদি এসব কথা চিন্তা করেই এরদোয়ান চীন-রাশিয়ার সাথে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। একই সাথে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে স্থাপন করেছে বড় রকমের প্রভাব। আর কুর্দিদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে ভবিষ্যত ঝুকিকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পেরেছে।
বলাই বাহুল্য আঙ্কারার শক্ত পররাষ্ট্রনীতির সামনে ওয়াশিংটন হুট করেই বড় কিছু ঘটাতে পারবে না। তবে, বাইডেন শাসনের ৪ বছর যে তুরস্কের জন্য মোটেও সুখকর হবে না তা সুস্পষ্ট।