স্টাফ রিপোর্টার।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়কালে সড়কপথে মোট ১৭,৯৫৭টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২,৭৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন ১৭,৮২৬ জন। গবেষণা ও সচেতনতা ভিত্তিক সংগঠন ‘সেভ দ্য রোড’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ জুলাই বিজয় মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির মহাসচিব শান্তা ফারজানা বলেন, “সেতু ও সড়কে আলাদা বাইক লেন না থাকা, বেপরোয়া রাইড শেয়ারিং, লাইসেন্সবিহীন দ্রুতগামী মোটরসাইকেল এবং অনুমোদনহীন ব্যাটারি চালিত অটো-রিকশার অবাধ চলাচল দুর্ঘটনার বড় কারণ হয়ে উঠেছে।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধুমাত্র ব্যাটারি চালিত অটো, সিএনজি ও থ্রি হুইলারের কারণে ৮,৮১২টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮,৮১৫ জন এবং নিহত হয়েছেন ৭৯৫ জন। এছাড়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৬৭৩ জন, বাস দুর্ঘটনায় ৮২৫ জন এবং ট্রাক-পিকআপ-লড়ি দুর্ঘটনায় ৪৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সেভ দ্য রোড-এর প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী আরও জানান, “গত ছয় মাসে পুলিশ বুথ বা ওয়াচ টাওয়ারের অভাবে ১১৮টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, যাতে আহত হয়েছেন ১০৪ জন। নারীদের শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটেছে ৬১৪টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২টি।”
রেলপথে বিভিন্ন হামলা ও দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৮৪ জন এবং নিহত হয়েছেন ১৪ জন। অন্যদিকে নৌপথে ৬১৫টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৪৫১ জন আহত হন। বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়েছেন ৩১৬ জন যাত্রী।
সেভ দ্য রোড-এর মতে, বিআরটিএ ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতাদের দুর্নীতি এবং লাইসেন্সবিহীন ও ফিটনেসবিহীন বাহনের চলাচলই সড়কে নৈরাজ্যের মূল উৎস। তারা বলছে, এই পরিস্থিতি অন্তবর্তীকালীন সরকারেও অপরিবর্তিত রয়েছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে: দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ গঠন, দুর্ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত শাস্তি এবং পথ নিরাপদ রাখতে সকল পক্ষের সম্মিলিত উদ্যোগ।
২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করা ‘সেভ দ্য রোড’ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথকে দুর্ঘটনামুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।