ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রনের ঘোষণায় ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, আগামী সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
ম্যাক্রন বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গাজায় যুদ্ধের অবসান ও সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষা করা।’’ একইসঙ্গে তিনি বন্দী মুক্তি, গাজায় মানবিক সহায়তা এবং হামাসকে নিরস্ত্র করার আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি তার টিকে থাকার জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার কথাও বলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনের এই ঘোষণাকে অনেকেই ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেছেন। ফিলিস্তিনসহ তুরস্ক, জর্ডান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ইউরোপের বহু মুসলিম ম্যাক্রনের এই অবস্থানকে ‘সাহসিকতা’ হিসেবে দেখছেন। সামাজিক মাধ্যমে তাকে “নবনির্বাচিত মুসলিম মন” এবং “মুসলমানদের বন্ধু” বলেও অভিহিত করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ম্যাক্রনের পদক্ষেপকে “আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের পক্ষে শক্ত বার্তা” বলে স্বাগত জানিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে—ঢাকা ফ্রান্সের অবস্থানকে ইতিবাচকভাবেই দেখছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফ্রান্সের এই অবস্থান ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ঐক্য এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন সমীকরণের মুখে ফেলতে পারে। তবে ম্যাক্রনের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শুধু ফিলিস্তিন নয়, বরং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার পথ সুগম হবে।
সামাজিক মাধ্যম এক্স, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ম্যাক্রনের বক্তব্য ব্যাপকভাবে শেয়ার হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, পশ্চিমা বিশ্বে এধরনের অবস্থান সাধারণত দেখা যায় না এবং ম্যাক্রনের এই পদক্ষেপ মুসলিম বিশ্বে একটি আস্থার জায়গা তৈরি করবে।
বিশ্ব রাজনীতিতে এই ঘোষণা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময় বলবে। তবে সন্দেহ নেই, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির পথে এমানুয়েল ম্যাক্রনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।