বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সোমবার (২৮ জুলাই) যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করা খেলনা তৈরির কারখানা ‘কাপকেক এক্সপোর্টস’ পরিদর্শন করেছেন। এই পরিদর্শনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণ এবং যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রবেশের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা।
পরিদর্শনকালে হাইকমিশনার ও বিশেষ দূত খেলনা উৎপাদন প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং কোম্পানির কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। তারা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুযোগ ও প্রতিবন্ধকতাগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
নতুন পণ্য রপ্তানিকারকরা প্রায়শই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নীতিগত ও প্রশাসনিক বাধার সম্মুখীন হন, পাশাপাশি নতুন বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রেও তাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এই সমস্যাগুলো মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে, যাতে ব্যবসা ও রপ্তানি সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা যায়। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধি ও বৈচিত্র্য আনতে এবং যুক্তরাজ্যের ক্রেতাদের বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের সঙ্গে সংযুক্ত করতে নিরন্তর কাজ করে যাবে।
যুক্তরাজ্য সরকার গত ১০ জুলাই তার উন্নয়নশীল দেশগুলোর ট্রেডিং স্কিম আরও সহজ করার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন এই পদক্ষেপগুলো, যা পণ্য উৎসের নিয়মকে আরও সরল করে, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য যুক্তরাজ্যে রপ্তানি প্রক্রিয়াকে আরও মসৃণ করে তুলবে। এটি বাংলাদেশকে রপ্তানি মূল্য চেইনে এগিয়ে যেতে এবং নতুন পণ্যগুলোতে বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম করবে, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য হ্রাসে সরাসরি সহায়তা করবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, “নতুন বাণিজ্য সুযোগ উন্মোচন, ব্যবসাবান্ধব সংস্কারকে সমর্থন এবং যুক্তরাজ্যের ক্রেতাদের উচ্চমানের বাংলাদেশি পণ্যের বিষয়ে পরিচয় করিয়ে দিতে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি বৈচিত্র্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের উন্নয়নশীল দেশ বাণিজ্য প্রকল্প ‘কাপকেক এক্সপোর্টস’-এর মতো বাংলাদেশি ব্যবসাগুলোকে শূন্য শুল্কের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাজারে রপ্তানি করার সুযোগ করে দেয়। এটি পণ্যের দাম কমিয়ে যুক্তরাজ্যের গ্রাহকদেরও সুবিধা দেয়।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুন মাসে চালু হওয়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর ট্রেডিং স্কিম বিশ্বের অন্যতম উদার অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। এটি ২০২৯ সাল পর্যন্ত অস্ত্র ব্যতীত বাংলাদেশের সকল রপ্তানি পণ্যের জন্য যুক্তরাজ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করবে। ২০২৯ সালের পর, বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ রপ্তানি পণ্য বর্ধিত অগ্রাধিকার স্তরের অধীনে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে, যার মধ্যে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকও অন্তর্ভুক্ত।