ঢাকা, ২৩ অক্টোবর: ব্যাংক আমানতের উপর আবগারি শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের জন্য স্বস্তির খবর দিয়েছে সরকার। এখন থেকে ব্যাংক হিসাবে তিন লাখ টাকার বেশি স্থিতির উপর আবগারি শুল্ক কেটে রাখা হবে, যা আগে ছিল মাত্র এক লাখ টাকা। গত জুনে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় এই পরিবর্তন আনা হয়, যা সাধারণ গ্রাহকদের ওপর করের চাপ কিছুটা কমাবে।
আবগারি শুল্ক হলো একধরনের পরোক্ষ কর, যা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয় বা মুনাফার ওপর নয়, বরং ব্যাংকে টাকা রাখা বা নির্দিষ্ট আর্থিক কার্যক্রমের ওপর ধার্য করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই শুল্ক আদায় করলেও ব্যাংকগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা গ্রাহকের হিসাব থেকে কেটে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়।
আবগারি শুল্কের নতুন হার:
কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে বছরে একবারের জন্য হলেও স্থিতি তিন লাখ টাকা অতিক্রম করলেই তাকে এই শুল্ক দিতে হবে। নতুন হার অনুযায়ী:
| স্থিতির পরিমাণ (বছরে একবার) | আবগারি শুল্কের পরিমাণ |
| ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত | ০ টাকা |
| ৩ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত | ১৫০ টাকা |
| ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত | ৫০০ টাকা |
| ১০ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত | ৩,০০০ টাকা |
| ৫ কোটি টাকার বেশি | ৫০,০০০ টাকা |
উল্লেখ্য, বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ একবার উল্লিখিত সীমা স্পর্শ করলেই নির্দিষ্ট হারে শুল্ক কাটা হয়। সাধারণত ডিসেম্বর মাসের শেষ কার্যদিবসে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই অর্থ কাটা হয়। একজন গ্রাহকের একাধিক ব্যাংক হিসাব থাকলে প্রতিটি হিসাব থেকেই পৃথকভাবে আবগারি শুল্ক আরোপ হবে। সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) এবং ডিপিএস (ডিপোজিট পেনশন স্কিম) সহ প্রায় সব ধরনের আমানত হিসাব থেকেই এই শুল্ক কেটে রাখা হয়।
সরকার রাজস্ব সংগ্রহের উৎস শক্তিশালী করা, উচ্চ আয়ের করদাতাদের করজালে আনা এবং ব্যাংক হিসাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই এই শুল্ক আদায় করে থাকে।