বগুড়া প্রতিনিধি।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার মাধবডাঙ্গা গ্রামের চার একরজুড়ে বিস্তৃত রবিউল হাসান ওরফে ভুটান সরকারের বাড়িটি এখন পরিচিত “পাখিবাড়ি” নামে। প্রতিদিন এখানে ভোর শুরু হয় পাখির কিচিরমিচির আর পালকের ফড়ফড়ে শব্দে, যা আকর্ষণ করে স্থানীয় ও দূরদূরান্তের প্রকৃতিপ্রেমীদের।
৩৫ বছর আগে প্রথম একঝাঁক পাখি এসে বসেছিল ভুটান সরকারের বাড়ির তেঁতুলগাছে। সেই থেকেই শুরু হয় তাদের স্থায়ী বসবাস। প্রতি বছর গ্রীষ্মে পাখিরা আসে, বাসা বাঁধে, ছানা ফোটায় এবং শীত এলে দলবেঁধে চলে যায়।
পাখিবাড়ির সামনে দুটি বড় পুকুর, চারপাশে মেহগনি, কড়ই, জাম, আম, কাঁঠাল ও বাঁশঝাড়ে ঘেরা সবুজ পরিবেশ। এখানে পানকৌড়ি, বক, ঘুঘু, শালিক, টিয়া, চড়ুইসহ নানা প্রজাতির পাখি প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওড়ে বেড়ায়। আশ্চর্যের বিষয়, পুকুরে মাছ চাষ হলেও কোনো পাখি সেখানে মাছ ধরে না।
ভুটান সরকার বলেন, “প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের এক নীরব চুক্তি আছে—ওরা এখানে নিরাপদ, আমরাও ওদের সঙ্গে শান্তিতে আছি।”
স্থানীয়রা জানান, পাখিবাড়ি এখন শুধুই এক পরিবারের বসতভিটা নয়, বরং পরিবেশ সচেতনতার প্রতীক। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কবি ও আলোকচিত্রীরা প্রতিনিয়ত এখানে আসেন প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর করিম আপেল বলেন, “এটি ধুনট উপজেলার সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। সরকারিভাবে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলে পরিবেশ সংরক্ষণ আরও জোরদার হবে।”
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘তীর’-এর সভাপতি আশামনি বলেন, “পাখি বাঁচলে প্রকৃতি বাঁচবে, আর প্রকৃতি বাঁচলেই মানুষ টিকবে।