খুলনায় পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা তেরখাদার কুশলা গ্রামে দুই মাসের যমজ শিশু মনি ও মুক্তাকে তার মা কানিজ ফাতেমা কনা নিজেই হত্যা করে মরদেহ বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে বাচ্চা উধাও হওয়ার নাটক করেন । শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেছেন কানিজ ফাতেমা কনা।
জানা যায়, দুই কন্যা শিশুকে নিয়ে কয়েকদিন আগে তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামে বাবার বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন কনা খাতুন। গত বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ৩টার দিকে শিশু দু’টিকে দুধ খাওয়ানোর পর ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। ঘণ্টাখানেক পর শিশুদের আর খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। পরের দিন শুক্রবার সকালে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় শিশু দু’টির মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার মধ্যরাতে শিশু দুটির বাবা মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে কানিজ ফাতেমা কনাকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক কনাকে শুক্রবার রাতে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেরখাদা থানার এসআই এনামুল হক জানান, বাচ্চা দুটি সবসময় কান্নাকাটি করতো। এ নিয়ে কনা বিরক্ত ছিলেন। কয়েকদিন আগে কনা তার স্বামীকে ফোন করে তাদেরকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। স্বামী মাসুম বিল্লাহ ১ মার্চে তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন।
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কনার যমজ সন্তান ঘুম থেকে জেগে যায় এবং কান্নাকাটি শুরু করে। তখন দুধ খাইয়ে তাদের ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করেন কনা। কিন্তু তাদের কান্না না থামায় তিনি নাক-মুখ চেপে ধরে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে নিয়ে ফেলে দেন বলে জানান তিনি।
এসআই এনামুল হক জানান- হত্যার পর কনা নাটক সাজান যে, তিনি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার বিছানা থেকে বাচ্চা দুটি উধাও হয়ে গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক কনার বাবা শেখ খায়রুজ্জামান ও মা শরিফা বেগমকে শনিবার সকালে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কনা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হবে।