থাইল্যান্ডে এপেক সম্মেলন শুরুর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) এক লিখিত বক্তব্যে চীনা প্রেসিডেন্ট এশিয়ায় যেকোনো যুদ্ধ প্রত্যাখ্যান করার ওপর জোর দেন। সেই সঙ্গে নতুন করে শীতল যুদ্ধের ঝুঁকির ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন তিনি।
চলতি মাসে এশিয়ায় ইতোমধ্যে দুটি গুরুত্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আসিয়ান ও জি-২০ সম্মেলনের পর শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলন। এতে যোগ দিতে দেশটিতে জড়ো হয়েছেন বিশ্বনেতারা।
এবারের সম্মেলনের মধ্যদিয়ে জিনপিং মূলত চীনকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক ঐক্যের চালিকাশক্তি হিসেবে উপস্থাপন করতে চান। মূল সম্মেলন শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে দেয়া লিখিত বক্তব্যে সেটাই স্পষ্ট করেছেন তিনি।
জিনপিং তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল কারও উঠান নয়, আর কোনো পরাশক্তির শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চও হবে না।’ এরপর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ককে রাজনীতিকরণ ও অস্ত্রকরণের ব্যাপারেও হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নতুন করে শীতল যুদ্ধ ও পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার যেকোনো চেষ্টা এই অঞ্চলের মানুষ ও সময় বরদাস্ত করবে না।’ বক্তব্যে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করলেও এর মাধ্যমে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রকে একটা প্রচ্ছন্ন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এবারের এপেক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও চীনসহ এপেকের ২১ সদস্য রাষ্ট্রের নেতারা। বাণিজ্য, বিশ্ব অর্থনীতি এবং অন্যান্য ইস্যুতে আলোচনা হবে সম্মেলনে। থাইল্যান্ডে শুক্র ও শনিবার দুই দিনব্যাপী সম্মেলন শুরুর আগে বৃহস্পতিবার বিশ্বনেতাদের অনেকটা আয়েশ করেই একসঙ্গে রাতের খাবার উপভোগ করতে দেখা যায়।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্ন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাসহ সবাই থাই খাবার উপভোগ করেন।
শুক্রবার মূল সম্মেলন শুরুর আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিভিন্ন দেশের নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে। নেতারা অনেকেই একে অপরের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্য আরও বেশি অবদান রাখবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান শি জিনপিং।
এপেক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসও। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থ তুলে ধরবেন এবং মিয়ানমারে চলমান সামরিক হামলা সংক্রান্ত উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করবেন। এবারের সম্মেলনে প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় কোনো দেশের প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ থাই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। সময় নিউজ