এ আর রাকিবুল হাসান, কুড়িগ্রাম।
পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দেয়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর সেই মানিক রহমান জিপিএ-৫ পেয়েছে। চতুর্থ বিষয়সহ সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে সে। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ১২৪২। উপজেলার মধ্যে তারই মোট নম্বর বেশী। তার এ ফলাফলে পরিবার, শিক্ষক ও উপজেলাবাসী অত্যন্ত খুশি।
জন্ম থেকেই মানিক রহমানের দুই হাত নাই। দুই পা থাকলেও একটি লম্বা ও অন্যটি খাটো। পা দিয়ে কলম ধরে পরীক্ষা দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে সে। মানিক এ বছর ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ ফলাফল করে।
মানিক রহমান ফুলবাড়ী উপজেলা সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে ওষধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও মা প্রভাষক মরিয়ম বেগমের ছেলে।
মানিক জানায়, তার এ ফল প্রত্যাশিত ছিলো। এ ফলাফলে সে অত্যন্ত খুশি। সে এখন ঢাকা নটরডেম কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে আরো জানায় ভবিষ্যতে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান জানান, মানিক লেখাপড়া চালাতে যা করা দরকার তাই করবেন তিনি। তিনি আরো জানান, মানিকের ফলাফলে পরিবারের সবাই খুশি। মানিকের মা মরিয়ম বেগম জানান, আমার দুই ছেলে । মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। বড় ছেলে মানিক প্রতিবন্ধী এটা আমরা মনে করি না। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকলেও ছোট থেকে আমরা তাকে পাঁ দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। সমাজে অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়েদের চেয়েও মানিক পিএসসি ও জেএসসিতে ভাল রেজাল্ট করেছে। এটা আমাদের গর্ব। সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন। সে যেন সুস্থ সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে পারে। সে এইচএসসি পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করে তার স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে।
ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধি হওয়ার পরেও মানিক রহমান অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে ভাল ফলাফল করেছে। এ ফলাফলে বিদ্যালয়ের সবাই খুশি। তিনি আরো জনান, তার প্রাপ্ত মোট নম্বও হচ্ছে ১২৪২। যা উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ।