অবৈধভাবে গবাদিপশু পরিবহনের দায়ের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ভারতের গুজরাটের একটি আদালত। রায়ে গরু জবাইয়ের বিষয়ে আদালত কিছু কৌতূহলী পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। এনডিটিভি
গুজরাটের তাপি জেলা আদালতের মুখ্য জেলা জজ তার পর্যবেক্ষণে দাবি করেন, গোহত্যা বন্ধ হলে বিশ্বের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিচারকের এ উদ্ধৃতি আইনি সংবাদ ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’ প্রকাশ করেছে।
বিচারক সমীর বিনোদচন্দ্র ব্যাস তার পর্যবেক্ষণে আরও দাবি করেন, গোবরের তৈরি ঘরে পারমাণবিক বিকিরণের প্রভাব পড়ে না। এ ছাড়া গোমূত্র অনেক দুরারোগ্য রোগ নিরাময় করে।
এর আগে গোমূত্র-গোবরে অর্থনীতি শক্তিশালী করতে চান ভারতের এক মন্ত্রী। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিচারক যেসব দাবি করেছেন, তার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ১৬টির বেশি গরু অবৈধভাবে পরিবহনের মামলায় গত বছরের নভেম্বরে রায় দেন আদালত। এ মামলায় গত বছরের আগস্টে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে পাঁচ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়।
গোরক্ষা-সংক্রান্ত সব আলোচনা পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়া নিয়ে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ এ তথ্য জানান।
বিচারক বলেন, গরু শুধু প্রাণী নয়, সে মা-ও। একটি গরু ৬৮ কোটি পবিত্র স্থান ও ৩৩ কোটি দেবতার জীবন্ত গ্রহ। গোহত্যার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করেন বিচারক। তিনি বিভিন্ন শ্লোকের উল্লেখ করে বলেন, ‘গরুকে অসুখী রাখলে আমাদের সম্পদ-সম্পত্তি বিলীন হয়ে যায়।’
গোরক্ষা নিয়ে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা হয়েছিল তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না দেখে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, গরু শুধুমাত্র জন্তু নয়, সে হল মা। ৬৮ কোটি পবিত্র স্থান এবং ৩৩ কোটি দেবদেবীর জীবিত গ্রহ হল গরু।
এখানেই থামেননি তিনি, গরুর মাহাত্ম্য বোঝাতে আওড়েছেন সংস্কৃত শ্লোক। সেই শ্লোকের বাংলা তর্জমা খানিকটা এই রকম— যেখানে গরু আনন্দে থাকে সেখানে সমস্ত সুখ সম্পতি থাকে। যেখানে গরু আনন্দে থাকে না সেখানে সুখ সম্পত্তিও থাকে না, উধাও হয়ে যায়। গরু হল রুদ্রের মা, বসুদেবের কন্যা, অদিতিপুত্রদের বোন এবং ধ্রুত্রুপ অমৃতের সম্পদ। বিচারক এও বলেছেন, যদি গরু অবলুপ্ত হয়ে যায় তবে ব্রহ্মাণ্ডেরও অস্তিত্ব থাকবে না। যেদিন গরুর এক ফোঁটা রক্তও মাটিতে পড়বে না, সেদিন পৃথিবীর সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়েও যাবে এবং পৃথিবীর ভালো থাকা প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদেরসময় ডটকম