1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
এদেশের কৃষকের কাছে স্বরণীয় বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. এ এন এম রেজাউল করিম - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘শাপলা কাপ অ্যাওয়ার্ড’ পেলো গৌরীপুরে ২৪ জন গৌরীপুর ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  শ্যামনগর পৌরসভায় প্রায় ২ বছর পর জম্ম নিবন্ধন জটিলতার অবসান শরণখোলায় বিএনপি নেতার পক্ষে মহিলা দল ও  এতিম শিশুদের মধ্যে ঈদ বস্ত্র বিতরণ  অভয়নগরে ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে ইফতার  বিতরণ  শ্যামনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সেনাবাহিনীর হাতে আটক-৩ সুন্দরবনের গাছের ডাল থেকে এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করলো দুই জেলে অভয়নগরে সহপাঠির সাথে মারামারি,মাদ্রাসা ছাত্রের আত্মহত্যা মাগুরায় শিশু ধর্ষনে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিলো ক্ষুব্ধ জনতা কালীগঞ্জে পরিষদে ৩ যুবককে পেটানো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

এদেশের কৃষকের কাছে স্বরণীয় বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. এ এন এম রেজাউল করিম

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৯১ জন খবরটি পড়েছেন

।। ল ক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল।।
ড. এ এন এম রেজাউল করিম ১৯৪১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খুলনা শহরে জন্মগ্রহন করেন। ঢাকার পগোজ স্কুলে ক্লাস সিক্স পর্যন্ত অধ্যায়নের পর ১৯৫৬ সালে খুলনার সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬২ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএজি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৬৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে কীটতত্ব সহকারী পদে গবেষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন।

ফিলিপিন্সে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে একজন জবংবধৎপয ংপযড়ষধৎ হিসাবে ড. করিম ১৯৬৮ সালের মার্চ ১৯৭৯ সালের মে মাস পর্যন্ত কীটতত্ব বিষয়ে ১৫ মাসের একটি উচ্চতর গবেষণার কাজ সম্পাদন করেন। কীটতত্ব বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ সালে ড. করিম একজন জবংবধৎপয ভবষষড়ি হিসাবে ইরিতে পুনরায় যোগদান করেন এবং ১৯৭৫ সালে ঁহরাবৎংরঃু ড়ভ ঃযব চযরষরঢ়ঢ়রহবং ধঃ ষড়ং নড়হড়ং(টচখই) থেকে কীটতত্ব বিষয়ে এমএস(গঝ) ডিগ্রি লাভ করেন।
পরবর্তীতে, ১৯৭৮ সালে ঐ একই বিশ্ববিদ্যালয় (টচখই) থেকে কীটতত্ব বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ড. করিম ১৯৬৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে কীটতত্ব এবং ধান উৎপাদন বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা র্কাযক্রমে কাজ করেন। ১৯৭০ সালের ১লা অক্টোবর তারিখে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইস্টিটিউট (ব্রি) প্রতিষ্ঠিত হলে তাঁকে কীটতত্ব বিভাগে একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত করা হয়।

১৯৭০ সালের ১লা অক্টোবর থেকে ১৯৯৮ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন পদে নিযুক্ত থেকে ফসলের পোকা-মাকড় দমন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে গবেষণা সম্পাদন ও পরিচালনা করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে ড. করিম আইপিএম(ঞহঃবমৎধঃবফ ঢ়বংঃ) দমন ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবনের উদ্দেশ্যে গবেষণা কার্যক্রম শুরু ও পরিচালনা করেন এবং বিভিন্ন আইপিএম প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ধান ফসলে আইপএম পদ্ধতি ব্যবহার করে ধানের পোকা-মাকড় দমন ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৯৭৮ সালের অক্টোবর মাসে ব্যাংককে অবস্থিত ঋঅঙ(ঋড়ড়ফ ধহফ অমৎরপঁষঃঁৎব ঙৎমধহরুধঃরড়হ) আফিস কতৃক আইপিএম এর উপর একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মিটিংয়ে ড. করিম বাংলাদেশের ধান ফসলের পোকা-মাকড় দমন ব্যবস্থাপনার জন্য আইপিএম পদ্ধতি ব্যবহারের বর্তমান অবস্থা ও সুযোগ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ পেশ করেন। এফএও কর্তৃৃপক্ষ ড. করিমের উক্ত প্রবন্ধ সাথে বিবেচনা করেন এবং এরই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ ১৯৮১ সালে আইপিএম পদ্ধতি ব্যবহারে মাধ্যমে ধান ফসলের পোকা-মাকড় দমনের জন্য ঋঅঙ- আইপিএম প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়।

ধান ফসলের পোকা-মাকড় দমনের জন্য ড. করিম যে সমস্ত আইপিএম প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছিলেন, এখন পর্যন্ত সেই সম্ধসঢ়;স্ত প্রযুক্তি কৃষকের ধান ক্ষেতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই জন্য ড. করিমকে বাংলাদেশে আইপিএম এর প্রবর্তক হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। ড. করিম ১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইস্টিটিউট (ব্রি)-এর পরিচালক (গবেষণা) হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৮ সালের ২৬শে ফেব্রæয়ারি মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন কালে তিনি ব্রি-এর গবেষণা কার্যক্রম প্রণয়ন ও পরিচালনায় সামগ্রিক নেতৃত্বদান করেন। ১৯৯৮ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারি তিনি ব্রি-এর সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
ব্রি-এর সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করার পর ১৯৯৮ সালের আগস্ট মাস থেকে ২০১১ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ইউএসআইডি(টঝঅওউ)-এর অর্থায়নে এবং ইউএসএ-এর ঠরৎমরহরধ ঞবপয বিশ^বিদ্যালয়ের সামগ্রিক তত্বাবধানে পরিচালিত ওচগ ঈজঝচ (ওহঃবমৎধঃবফ চবংঃ ঈড়হঃৎড়ষ ঈড়ষষধনড়ৎধঃরাব জবংবধৎপয ঝঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ চৎড়মৎধস) প্রকল্পের বাংলাদেশের সাইট কো-অরডিনেটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন, এবং এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনের জন্য নেতৃত্বদান করেন। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে শাক-সবজির বিভিন্ন পোকা-মাকড় ও রোগ-বালাই দমনের জন্য লাগসই আইপিএম প্রযক্তি উদ্ভাবন করা আইপিএম প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সবজি চাষীবৃন্দের আয় বৃদ্ধি করা এবং কৃষকের কাছে আইপিএম প্রযুক্তিসমূহ পৌঁছে দেয়া। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বারি) প্রকল্পের একটি প্রধান সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং বারি-র বিজ্ঞানীগণ প্রকল্পের প্রারম্ভ থেকে শাক-সবজির বিভিন্ন পোক-মাকড় ও রোগ-বালাই দমনের জন্য লাগসই আইপিএম প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা এবং কৃষকের কাছে আইপিএম প্রযুক্তিসমূহ পরিচিত করার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বারি’র বিজ্ঞানীগণ এ অবধি বিভিন্ন সবজি ফসলের জন্য নয়টি আইপিএম প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি-প্যাকেজ উদ্ভাবন করেছেন যা সবজি চাষীগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বর্তমানের বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি চাষীগণ বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু আইপিএম প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের সবজি সাফল্যজনকভাবে উৎপাদন করছেন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

আইপিএম প্রযুক্তি সমুহ উদ্ভাবনের ফলে বর্তমানে স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ শাক- সবজি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে এবং এ সব স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ শাক-সবজি বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে আইপিএম সিআরএসপি প্রকল্প প্রবর্তনের আগে মাক-সবজি বিভিন্ন পোকা-মাকড় ও রোগ-বালাই দমনের জন্য কোন আইপিএম প্রযক্তি সবজি চাষে প্রয়োগ করা হোত না এবং সবজি চাষীগণও আইপএম প্রযুক্তিসমূগের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না। আইপিএম সিআরএসপি প্রকল্প প্রবর্তনের ফলে বারি’র বিজ্ঞানীগণ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানীগণের সঙ্গে একত্রে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন ও পরিচালনার সুযোগ লাভ করেন এবং সব্জির বিভিন্ন পোকা-মাকড় ও রোগ-বালাই দমনের জন্য আইপিএম প্রযুক্তি সমুহ উদ্ভাবনে সফলতা অর্জন করেন। এ ব্যাপারে আইপিএম সি আর এস পি প্রকল্পের কোন অরডিনেটর হিসাবে দেশী-বিদেশী সংস্থা ও বিশ্ব বিদ্যালয়সমূহের সঙ্গে সংযোগ ও সমন্বর সাধন করে সবজি চাষে আইপিএম প্রযুক্তি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত করার ব্যাপারে ড. করিম যে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব ও অবদান রেখেছেন তা দেশে ও বিদেশে অত্যন্ত প্রসংশিত হয়েছেন এবং এদেশের কৃষকের কাছে স্বরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে বরণীয় হয়ে আছেন।

২০১২ সালের ৯,১০ও ১১ই মার্চ খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে “গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র“ আয়োজিত গ্রামীন জীবনযাত্রা ও কৃষি প্রযুক্তি তথ্য,বীজ মেলার অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশ তথা অত্র অঞ্চলের ৩০ জন গুনীজনের সম্মাননা প্রদান করা হয়।ওই সময় জীবদ্দশায় গুনীজন সম্মাননার মধ্যে জাতীয় বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী ড. এ এন এম রেজাউল করিম ছিলেন অন্যতম একজন।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews