সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া
বিভিন্ন দেশের বিমান ব্যবহার করছে বাংলাদেশের আকাশ; অথচ দিচ্ছে না কোনো রাজস্ব। অনেক ক্ষেত্রে আবার আকাশ ব্যবহারের প্রমাণ পেলেও বিল আদায় করতে হচ্ছে ম্যানুয়ালি। আধুনিক রাডার না থাকায় স্বাধীনতার পর থেকে এমন বহু ঘটনায় কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে দেশ।
যদিও হাত গুটিয়ে বসে নেই পাশের দেশ ভারত। আধুনিক রাডার থাকায় এর পুরো ফায়দা লুটে নিচ্ছে দেশটি। দক্ষিণ এশিয়ায় রুট হিসেবে লাভজনক হওয়ায় অনেক এয়ারলাইন্স ব্যবহার করে বাংলাদেশের আকাশপথ শূন্যে ভেসে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাত্রী ও পণ্য নিয়ে যায় বাংলদেশ বিমান। গন্তব্যে পৌঁছতে যেসব দেশের আকাশ ব্যবহার করতে হয়, আন্তর্জাতিক আইন মেনে সর্বনিম্ন ৫০০ ডলার অর্থ পরিশোধ করতে হয় সেসব দেশকে। তবে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এ দেশও কি পাচ্ছে আকাশ ব্যবহারের সব ভাড়া? স্বাধীনতার ৫ দশক পর এমন প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন। কারণ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটির আকাশে উড়া ছাড়া অন্য কোন ফ্লাইটের সরাসরি তথ্য পায় না সংস্থাটি। এই তথ্য ভারত হাতিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি এমন একটি প্রতিবেদন সামনে আসতেই তোলপাড় শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দেশপ্রমিক জনতা ব্যাপক উদ্বেগ জানিয়েছেন।
উদ্বেগ জানিয়ে ফেসবুকে জুনায়েদ লিখেছেন, দক্ষিন এশিয়ায় একমাত্র বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করলে অন্তত ৯৫ ভাগ বানিজ্যিক বিমানকে- বাংলাদেশকে কোন ডলার দিতে হয় না। বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে, কিন্তু চার্জ পায় ভারত। ভারতের রাডার থেকে সিগনাল রেজিস্ট্রার করা হয়, তাই এইসব বিমান থেকে বাংলাদেশের আকাশ সীমা ব্যবহারের সকল অর্থ পায় ভারত। আন্তর্জাতিক নিয়মে কোন দেশের আকাশ, অন্য দেশের বানিজ্যিক বিমান ব্যবহার করলে- অন্তত পাঁচশত ডলার দিতে হয় সেই দেশকে।
নজরুল ইসলাম লিখেছেন, মনে রাখতে হবে ১৭৫৭ এর মতো আমরা যেন আবার স্বাধীনতা না হারাই৷ আমার মনে হচ্ছে বর্তমানে ১৭৫৭ সালের মীর জাফর এর কথা৷
সরকারের সমালোচনা করে মাহবুব হোসাইন লাবলু লিখেছেন, বন্ধু রাষ্ট্র ভারতে স্বার্থ রক্ষা করতে হবে না। এ সরকার তো ভারতের স্বার্থ রক্ষার করার জন্য বসে আছে। ভারত সব তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে, আর আমাদের সরকার বসে বসে তাকিয়ে দেখছে।
আলী মর্তুজার প্রশ্ন, এই ৫০ বছরে এভিয়েশন কি করলো তাহলে?? নাকি ইচ্ছা করে কমিশনের জন্য রাডার বসাতে দেয়নি তা তদন্ত করে জাতির সামনে তুলে ধরার জোর দাবি জানাচ্ছি।
আক্ষেপ করে এহসান বকুল রানা লিখেছেন, এই হলো আমাদের অবস্থা? দেশের আকাশসীমার স্পর্শকাতর তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে ভারত!চোখের সামনে হাজার হাজার কোটি টাকা বাতাসে উড়ে গেলেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কেনো এতো ধীরগতি, এর কোন উত্তর নেই সিভিল এভিয়েশনের কাছে।
মো: নুরে আলম সবুজ লিখেছেন, আমরা রাডার কিনে টাকা নষ্ট করতে চাই না। আমরা সে টাকা দিয়ে রং কিনে আল্পনা একে গ্রিনিচ বুকে নাম লেখাবো।
আলী হাসান লিখেছেন, মজার তথ্য হল হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ২০১৭ সালে, ছয় বছর আগে চট্টগ্রামের জন্য নতুন একটি ৪র্থ প্রজন্মের রাডার কেনা হয়। উক্ত রাডারটি ২০১৭ সালে স্থাপন করা হলেও এখন পর্যন্ত চালু করে কমিশন করা সম্ভব হয় নাই। ভারতের কারণেই এই রাডার সচল করা হচ্ছে না। রাডারটি বসানোর সময়েও ভারত আপত্তি জানায়। অথচ ভারত তাদের রাডার ব্যবহার করে বাংলাদেশের আকাশ সীমা ভাড়া গুনছে আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো থেকে। যার বার্ষিক আয়ের পরিমান প্রায় ১০০ কোটি ডলারের উপরে। এক ভারতকেই প্রতিদিন গড়ে একশোর উপর বিমান বাংলাদেশের আকাশ সীমা ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রদেশে যাতায়ত করতে হয়। অথচ ছয় বছর থেকে চট্টগ্রামের রাডারটি অযত্নে থেকে মেয়াদ হারাচ্ছে প্রতিদিন।
সামসুজ্জোহা লিখেছেন, ১৪ কিলোমিটার রাস্তায় আলপনা আঁকতে খরচ ৭ কোটি টাকা, রোবট সোফিয়া ভাড়া করে আনতে খরচ ১২ কোটি টাকা, কিন্তু রাডার কেনার টাকা ও ইচ্ছে কোনোটাই নেই। তবুও আমরা ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ।সূত্র – ইনকিলাব