স্টাফ রিপোর্টার
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে “জুলাই গনঅভ্যুত্থান” এর সময় আন্দোলন দমন করতে র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারার পরিকল্পনা ও এই অভিযানের সাংকেতিক নামের আদ্যপান্ত।
আমার দেশের অনুসন্ধানে বলা হয়েছে বাংলাদেশে আন্দোলন দমনে প্রথমবারের মতো হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণের অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির শংকরের বাসায়। এই পরিকল্পনার মূল উদ্ভাবক ছিলেন র্যাবের সাবেক ডিজি ব্যারিস্টার হারুন-অর-রশীদ। ডিএমপির তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন ও তৎকালীন আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন এই পরিকল্পনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
এই অভিযানটির কোড নাম ছিল ‘অপারেশন ক্লিনডাউন’, যা জুলাই বিপ্লবের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে ব্যবহার করা হয়। র্যাবের বেল ৪০৭ হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ চালানো হয়েছিল যাত্রাবাড়ী, রায়েরবাগ এবং মিরপুরের মতো এলাকায়। এতে অনেক মানুষ নিহত ও আহত হন। নিহতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী জোবাইদ হোসেন ইমন, গৃহবধূ সুমাইয়া (২০) এবং ৪ বছর বয়সী শিশু আব্দুল আহাদ উল্লেখযোগ্য।
র্যাবের বর্তমান ডিজি একেএম শহিদুর রহমান “আমার দেশ” পত্রিকাকে জানান, হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণসহ র্যাবের সব কার্যক্রমের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দোষী প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে শুধু গুলিবর্ষণ নয়, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে র্যাব। তবে এ ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার মুখে র্যাব শুরুতে গুলিবর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল।
আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার ব্যবহারের ঘটনা দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় তোলে। এ বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে এখন তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত অনেকেই বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।