ডেস্ক নিউজ
গত দেড় দশকে বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগের নেতা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিভিন্ন নাম ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৮৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। খবর দৈনিক আমার দেশের।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন অনুসারে, সালমান এফ রহমান এককভাবে ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ও ৭ হাজার কোটি টাকা পুঁজিবাজার থেকে নিয়েছেন। তার মালিকানাধীন এবং বেনামি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ও নিয়মনীতি ভেঙে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুট করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ হাজার কোটি টাকা এখন খেলাপি অবস্থায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সালমান এফ রহমান এবং তার সহযোগীরা দেশের ব্যাংকিং খাতে বিশাল অনিয়ম এবং দুর্নীতি চালিয়েছেন। সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, “রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ভঙ্গুর অবস্থায় পড়ে গেছে এবং সঠিক পদক্ষেপের অভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।”
বিশেষ করে জনতা ব্যাংক থেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংকসহ আরও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। সালমান এফ রহমানের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা দিতে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা অনিয়ম করেছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে।
এছাড়া, শেয়ারবাজারে তার কারসাজির কারণে অনেক বিনিয়োগকারী পথে বসেছেন। তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যক্তি ও বেনামি প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে শেয়ার কিনে পুঁজিবাজারে কারসাজি করেছেন। গত কয়েক বছরে ৭৪ ব্যক্তি ও ৮টি বেনামি প্রতিষ্ঠান ৬ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনে এ ঘটনা বাস্তবায়ন হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্সি ইউনিট (বিএফআইইউ) শেয়ারগুলো বাজেয়াপ্ত করেছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অনেক ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ দেয়ার সময় ব্যাংকগুলো নির্ধারিত নিয়মনীতি অনুসরণ করেনি, যার ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারি ব্যাংকগুলো থেকে বের হয়ে গেছে। এসব ঋণ সঠিকভাবে ফেরত না আসার কারণে দেশের ব্যাংক খাতে একদিকে যেমন দুর্নীতি বেড়েছে, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির জন্যও এটি বিপজ্জনক।