খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিচারের দাবিতে চলমান শান্তিপূর্ণ অবরোধে পাহাড়িদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও পাহাড় সমতল শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দাবিতে মশাল মিছিল করে গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর ) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে “গণ বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও সাধারণ শিক্ষার্থী’র” ব্যানারে মশাল মিছিল নিয়ে বাদামতলা হতে প্রধান ফটকে অবস্থান করে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এ সময় তারা ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘পাহাড়-ভূমি সমতলে, লড়াই হবে সমানতালে’ ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁয় নাই’, ‘খাগড়াছড়িতে হামলা কেন, প্রশাসনের জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
এ প্রসঙ্গে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম খান বলেন, “যারা বাংলাদেশের জমিনে বিভেদ করতে চায়। যারা হাসিনার দেখানো পথে নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন চালায় তাদের কেউ একই ভাবে উচ্ছেদ হয়ে অন্য রাষ্ট্রের আশ্রয় নিতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই রাষ্ট্র আমাদের সবার, ঐক্যবদ্ধ হয়েই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মান করতে হবে।”
অগ্নীসেতু সাংস্কৃতিক পরিষদের সাবেক সভাপতি পবিত্র কুমার শীল বলেন, “আমরা ফিলিস্তিন মানুষের কষ্টে যেমন ব্যথিত হই ঠিক একই ভাবে আমরা পৃথিবীর যেখানেই মানুষ নিপিড়নের শিকার হয় আমরা কষ্ট পাই। যাদের হত্যা করা হয়েছে তারা চেয়েছিলো ধর্ষণের বিচার, নূন্যতম নাগরিক অধিকার। যে রাষ্ট্রে বিচার চাইতে গেলে নিপিড়নের শিকার হতে হয় সে রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র বলা যায় কিনা সেটাও প্রশ্ন রেখে যেতে চাই।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, এখানে ভিন্নধর্মীদের উপাসনালয়ে আক্রমণ করা হয়। কথা বললে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হয়। এই রাষ্ট্রকে নিশ্চিত ভাবে তার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতেই হবে।”
গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (গকসু) নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ইয়াসিন আল মৃদুল বলেন, “ধর্ষক কখনোই মানুষ হতে পারে না। উল্টো ধর্ষকের বিচার চাইতে গিয়ে উলটো নিপিড়নে শিকার হওয়া আরো নিন্দনীয়। পাহাড়ি বা সমতল আমরা আলাদা কেউ নই। প্রশাসনের প্রথমত উচিত ধর্ষণের বিচার করা সেনাদের আক্রমণ বন্ধ করা।” গণ বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আক্য মারমা বলেন, “বাংলাদেশে একপ্রকার ট্রেডিশনই হয়ে গেছে ধর্ষণের বিচার চাইতে গেলে আগে হয়রানির শিকার হতে হবে। পাহাড় যেন একটা বাউন্ডারি, কোনো ঘটনা এই বাউন্ডারির বাইরে আসেনা। কোনো খবরে এই ঘটনা (ধর্ষণের) নেই! আমাদের এই বাউন্ডারির খুলে দিতে হবে। সমগ্র বাংলাদেশে আমরা আমাদের কথা ছড়িয়ে দিতে চাই, এর মধ্য দিয়েই আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।”