1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
মোবাইল-আসক্তিতে জর্জরিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
পদ্মায় তীব্র ভাঙনে আতঙ্কিত নদীপারের জনজীবন বাগেরহাটে চিংড়ি ঘেরে ইঁদুর মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে এক কৃষকের মৃত্যু ভূমিকম্প ঝুঁকির মানচিত্রে তুলনামূলক নিরাপদ পশ্চিম-দক্ষিণাঞ্চল শিবির ছেড়ে ছাত্রদলে যোগ দিলেন ছাত্রশিবির নেতা রুবেল বাউফলে এনসিপি নেতার সমর্থনে নির্মিত তোরণে আগুন, স্থানীয়দের ক্ষোভ দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা খালেদা জিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জরুরি সভায় বসছে এনটিআরসিএ যশোর-৪ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে অভয়নগরে গণসমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত একশো পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রাণ গ্রুপে, অভিজ্ঞতা ছাড়াই আবেদন উপকূল রক্ষা বাঁধ ছিদ্র করে পাইপ স্থাপন, ‘আদালতে রিট হওয়ায় অসহায় পাউবো’

মোবাইল-আসক্তিতে জর্জরিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৩ জন খবরটি পড়েছেন

লেখক: মোঃ আব্দুল আউয়াল।

একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রযুক্তিগত বিপ্লব স্মার্টফোন, কিন্তু এর লাগামহীন ব্যবহার আমাদের শিক্ষার্থী সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে এক নীরব সংকটের মুখে। বিশ্বজুড়ে গবেষণা বলছে, মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি, ঘুম ও মানসিক স্বাস্থ্যে মোবাইল যে আঘাত হানছে, তা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

১. ডিজিটাল ডোপামিন: নীরব সংকট ও বৈশ্বিক সতর্কতা
স্মার্টফোন আজ তথ্য, যোগাযোগ ও বিনোদনের প্রবেশদ্বার। এই সহজলভ্যতা একদিকে যেমন উন্নতির নতুন দিগন্ত খুলেছে, তেমনি জন্ম দিয়েছে ‘ডিজিটাল ডোপামিন আসক্তি’ নামক এক নতুন সমস্যার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), ইউনেস্কো (UNESCO), ইউনিসেফ (UNICEF) এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে: অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার শিক্ষার্থীদের মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি এবং শিক্ষাগত ফলাফলের ওপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
“ডিজিটাল সুবিধা যত বাড়ছে, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্থিরতা, মনোযোগ এবং সামাজিক আচরণ তত দ্রুত বদলাচ্ছে।”
— ইউনেস্কো রিপোর্ট, ২০২৩

বিশ্বব্যাপী কিশোর-তরুণদের ৯০%-এর বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করে। Common Sense Media (2022) দেখায়, একজন ৮-১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী দিনে গড়ে ৭-৮ ঘন্টা স্ক্রিনের সামনে কাটায়—যার সামান্য অংশই শিক্ষামূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। সোশ্যাল মিডিয়া, গেমস এবং দ্রুতগতির কনটেন্টে ডুবে থাকা এই প্রজন্ম জ্ঞানচর্চার আগ্রহ হারাচ্ছে।
২. বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র: যখন স্ক্রিন-টাইম বাড়তেই থাকে
বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। BBS-এর ICT Use Survey 2022 অনুযায়ী, ১২–২৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ৭২% মোবাইল ব্যবহার করে, এবং এদের মধ্যে ৪৫% শিক্ষার্থী পড়াশোনার সময়ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও BRAC Institute of Educational Development (BIED)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল আসক্তির কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো প্রকট:

  • মনোযোগহীনতা ও বিরক্তি: সামান্য চাপ সহ্য করার ক্ষমতা কমে যাওয়া।
  • শিক্ষাগত ফল পতন: টিকটক রিলস, ইনস্টাগ্রাম ও গেমিংয়ে আসক্তির কারণে পড়াশোনার সময় ও আগ্রহ কমে যাওয়া।
    ৩. মনোযোগের ফাটল: মনস্তাত্ত্বিক বিপর্যয়
    মোবাইলের ক্রমাগত নোটিফিকেশন, রিংটোন এবং ভাইব্রেশন মস্তিষ্ককে ছোট ছোট ‘রিওয়ার্ড সিগনাল’ বা উত্তেজনার দিকে ধাবিত করে। এর ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক মনোযোগ ক্ষমতা (Attention Span) মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

৪. ঘুমের ওপর নীল আলোর আগ্রাসন
মোবাইল স্ক্রিনের নীল আলো (Blue Light) মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। এই হরমোনই আমাদের ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে:

  • ঘুমের মান নষ্ট হয়।
  • সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়।
  • ক্লাসে তন্দ্রাভাব এবং শেখার প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়।
    WHO-এর গাইডলাইন স্পষ্টভাবে বলে—কিশোরদের জন্য প্রতিদিন দুই ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
    ৫. উত্তরণের পথ: প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ
    মোবাইলকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না করে এর স্বাস্থ্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করাই হলো আসল চ্যালেঞ্জ। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের সমন্বয়ে একটি সচেতনতা বলয় তৈরি করা অপরিহার্য।
    ক. পরিবার: প্রথম সুরক্ষা প্রাচীর
  • সময় নির্ধারণ: শিশু-কিশোরদের মোবাইল ব্যবহারের জন্য কঠোর এবং নির্দিষ্ট সময়সীমা তৈরি করুন।
  • ডিজিটাল ডিটক্স: পড়াশোনার সময়, খাবার টেবিলে এবং শোবার ঘরে মোবাইল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করুন।
  • আদর্শ স্থাপন: অভিভাবক হিসেবে নিজেদের ডিজিটাল অভ্যাস স্বাস্থ্যকর রাখুন।
    খ. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্র
  • নীতিমালা ও সেশন: ক্লাসরুমে মোবাইল ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতিমালা তৈরি করা। আসক্তি নিয়ে স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক সেশন পরিচালনা করা।
  • সুরক্ষা নীতি: শিশু-কিশোরদের জন্য অনলাইন সুরক্ষা নীতিমালা শক্তিশালী করা এবং আসক্তিকর গেম ও বিপদজনক অ্যাপ নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ নেওয়া।
    গ. শিক্ষার্থীর করণীয়
  • ফোকাস অ্যাপ ব্যবহার: নির্দিষ্ট সময় ফোকাস অ্যাপ ব্যবহার করে মোবাইল থেকে দূরে থাকা।
  • বিকল্প বিনোদন: নিয়মিত ব্যায়াম, খেলাধুলা, বই পড়া এবং পরিবার-বন্ধুদের সাথে বাস্তব সময় কাটানো।
    উপসংহার: প্রযুক্তির সুফল, কুফল নয়
    মোবাইল ফোন আধুনিক জীবনের এক অপরিহার্য অংশ। কিন্তু এর অপব্যবহার আমাদের শিক্ষার্থী সমাজকে অমেধাবী, অমনোযোগী ও মানসিকভাবে দুর্বল করে তুলছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যদি প্রযুক্তির সুফল দিতে চাই, তবে আজ থেকেই প্রয়োজন কঠোর শৃঙ্খলা, বিচক্ষণতা এবং প্রযুক্তির স্বাস্থ্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা। প্রযুক্তি হবে আমাদের সহযোগী—কখনো নিয়ন্তা নয়।
    তথ্যসূত্র: UNESCO (2023), UNICEF (2021), WHO (2020), BBS (2022), Common Sense Media (2022) এবং
  • দেশি-বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের রিপোর্ট

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews