রাজবাড়ীতে শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু শীলা দাস ( ৯ ) টানা ৬ বছর ধরে খাঁচায় বন্দী রয়েছেন ।
শীলা দাস জেলার কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ি ইউনিয়নের পূর্বফুল কাউন্নার গ্রামের চন্দন কুমার দাসের মেয়ে।
শিশুটির মা চন্দনা রাণী জানান,তাদের ৩ সন্তানের মধ্যে মেজো শীলা । প্রতিবন্ধী শীলা ৬ বছর ধরেই এভাবে খাঁচায় বন্দী রয়েছে। সে হাটতে পারেনা, হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করতে পারে। আশপাশের লোকজনকে মারধর করে, কামড়ে দেয় বলে তাকে খাঁচার বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিন বছর বয়সে শারীরিক সমস্যার বিষয়টি যখন পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে তখন থেকে খাঁচাবন্দী করে রাখা হয়েছে।
তিনি আরোও জানান,তার স্বামী সেলুনে নরসুন্দরের কাজ করে, শীলার বড় ভাই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে । সব চেয়ে ছোট ভাইয়ের বয়স দুই বছর। ওর বাবার সামান্য আয় করা টাকা দিয়েই তাকে চিকিৎসার জন্য অনেকবার ভারতে নিয়ে গেলেও কোনো কাল হয়নি । মারমুখী আচরণ করায় বারান্দায় একটি খাঁচা তৈরি করে শীলাকে সেখানে আটকে রাখা হয়েছে।
চন্দনা রাণী বলেন, দেশে যতটূকু সম্ভব চিকিৎসায় করাচ্ছি। প্রতিদিন ১৫০ টাকার ঔষধ লাগে তার। তাকে নিয়ে আমারা এখন খুবই চিন্তিত।
ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান কাজী শরীফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর শিশুটিকে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দিয়েছিলাম। যেখাবে ৬ মাস পর পর সে ২১০০ টাকা করে পায়। কিন্তু সামান্য টাকা দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, খাঁচার মধ্যে আটকে রাখার বিষয়টি অমানবিক।এতে তার মস্তিষ্কে বড় ধরনের ইফেক্ট পড়বে। শিশুটির মস্তিষ্কে সমস্যা তাই তাকে একটি নিউরো সার্জনের অধীনে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন ।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সরকারিভাবে বা সমাজসেবায় এরকম প্রতিবন্ধী শিশুদের রাখার ব্যবস্থা নেই কালুখালিতে। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর সমন্বয়ের মধ্যে আমরা প্রতিবন্ধীদের সহায়তা দিয়ে আসছি। আশা করি, প্রতিবন্ধী শিখা রানীকেও সব প্রকার সহায়তা করা হবে।