আজিজুল ইসলাম।।
ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজে’ চান্স পাওয়া সেই মেধাবী শিক্ষার্থী সুরাইয়া জান্নাত সেতুর মেডিকেলে ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছেন ‘’সংযোগ কানেক্টিং পিপল’’।
মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও ভর্তির আশংকায় মেধাবী সুরাইয়া জান্নাত সেতু শিরোনামে ৬ এপ্রিল আমাদের সময়ডটকম ও বিডিটেলিগ্রাফে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দেশ-বিদেশ থেকে অনেকে ফোন করে সহযোগীতার আশ্বাস দেন ।
সবার আশ্বাসে আশার আলো দেখতে পান সুরাইয়া জান্নাত সেতু ও তার দরিদ্র পিতা। কিন্তু না বেশীর ভাগ মানুষই এটা নিয়ে মজা করতে থাকেন। শুধু ফোন করে করে আশার বাণী শুনিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে থাকেন ।
এদের মধ্যে ব্যতিক্রমী আচরণ করেন একটি স্বেচ্ছাসেবি মানবিক সংস্থা ‘’সংযোগ কানেক্টিং পিপল’’। তারা এই প্রতিবেদকের সাথে যোগাযোগ করে সব কিছু জেনে তারা সিদ্ধান্ত নেন সরেজমিনে সুরাইয়া জান্নাত সেতুর বাড়িতে আসবেন। সেভাবে তারা প্রতিবেদকের কাছ থেকে লোকেশান নিয়ে এবং যোগাযোগ রেখে রমজান মাসের এক সকাল বেলায় সুরাইয়া জান্নাত সেতুর বাড়ীতে চলে ওই সংস্থার কর্মীবৃন্দ। তারা এসে সেতুকে বলেন , মেডিকেলে সুযোগ পেয়ে তিনি বাবা মায়ের গর্বের কাজ করেছেন, মুখ উজ্জ্বল করেছেন। এরকম একটা রত্ন, এরকম একটামেধাবী , যে অর্থের অভাবে মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবেনা এটা হতে পারেনা।
‘’সংযোগ কানেক্টিং পিপল’’এর দক্ষ কর্মীরা বিস্তারিত দেখেশুনে জানিয়ে দেন ভর্তিসহ এক বছরের ব্যায়ভার বহন করবেন তারা। হ্যা ‘’সংযোগ কানেক্টিং পিপল’’ সুরাইয়া জান্নাত সেতুর মেডিকেল পড়ার নিশ্চয়তা বিধান করেছেন। সংস্থার সদস্যরা সরেজমিনে মুগদা মেডিকেল কলেজে উপস্থিত থেকে সুরাইয়া জান্নাত সেতুর ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করেছেন।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মুগদা মেডিকেল কলেজ ঢাকায় ভর্তির সুযোগ পান যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের আব্দুল খালেক ও মোছা. সায়েরা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান সুরাইয়া জান্নাত সেতু । তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
সুরাইয়া জান্নাত সেতু পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সেতুর পিতা একজন দরিদ্র বিদ্যুত মিস্ত্রী। সেতুর পিতার নিজ বাড়ির মাত্র কয়েককাঠা জায়গা ছাড়া তেমন কিছুই নেই।তিনি বলেন, ‘আমার এক মাত্র মেয়ে সেতু । আমি একজন দিনমজুর। তার উপরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। আগের মতো কাজও করতে পারি না। আমার স্ত্রী প্যারালাইসে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। আমার একার আয়ে পরিবারের ভরন পোষনের কষ্ট হয়। তার উপর মেয়ের লেখা পড়ার খরচ চালাতে খুব কষ্ট হয় । ’সংযোগ কানেক্টিং পিপল মেডিকেলে চাঞ্চ পাওয়া মেয়েটার দায়িত্ব নেয়াতে খুব খুশী হইছি। এবার মেয়েটা সত্যিই ডাক্তার হতি পারবে।
শিক্ষার্থী সুরাইয়া জান্নাত সেতু বলেন, ‘আমি প্রাথমিক শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আসতে শিক্ষক সহপাঠিদের অনুপ্রেরণা ও সহযোগীতা পেয়েছি। মেডিকেলে চান্স পেয়ে এখন ভর্তির জন্য অনেকটা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ‘’সংযোগ কানেক্টিং পিপল’আমার কলেজে ভর্তির ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন।আমি আপনাদের কে বলতে চাই,আপনাদের সহযোগিতা পেলে ডাক্তার হয়ে গরিব অসহায় মানুষের সেবা করবো এবং আমার বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।