মোঃ নাজমুল ইসলাম সবুজ বাগেরহাট প্রতিনিধি।।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজার শের-ই বাংলা সড়কের ‘এএফসি’ মিনি চাইনিজ। কপোত-কপোতিদের ডেটিং করার নিরাপদ স্থান এটি। এখানে অবস্থানের সময় বেধে দেওয়া আছে ৩০ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট। জোড়ায় জোড়ায় এসে এই সময়ের মধ্যে আলাদা আলাদা কক্ষে পর্দার অন্তরালে বসে খাবারের পাশাপাশি চলে যা খুশি তাই। এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
তবে, এতোদিন এলাকায় বিষয়টি ওপেন-সিক্রেট থাকলেও এখন সেটি ওপেন হয়ে গেছে পুরোপুরিই। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে প্রশাসনের আকষ্মিক অভিযানে প্রমান মিলেছে লোকমুখে ঘুরপাক খাওয়া এতোদিনের সেই অভিযোগের। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নূর-ই আলম সিদ্দিকী অভিযানকালে বিভিন্ন স্কুল-মাদরাসার তিন জোড়া কপোত-কপোতিকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এসময় ওই মিনি চাইজটিতে মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার রাখা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে মালিক মীর আদাজ রানাকে ভোক্তা অধিকার আইনের আওতায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউএনও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই তলাবিশিষ্ট এই ‘এএফসি’ মিনি চাইনিজটিতে প্রথম ও দ্বিতীয় তলা মিলিয়ে রয়েছে ১৫-১৬টি ছোট ছোট কক্ষ। এই কক্ষগুলো রঙিন পর্দা দিয়ে সুরক্ষিত। একটি কক্ষে দুই জনের বেশি বসার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। নিচতলায় সাধারণ চেয়ার। আর ওপরের তলার কক্ষগুলোতে রয়েছে সোফাসেট। ভিআইপি এবং বড়দের জন্য করা ওপরের সোফাসেটের কক্ষগুলো। এখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রকমারি খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি চলে এসব কর্মকান্ড। স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তাদের প্রেকিম-প্রেমিকাদের নিয়ে এসে সময় কাটায় এখানে। বড়রাও আসেন বিশেষ বিশষে সময়ে। এমন অভিযোগ মানুষের মুখে মুখে থাকলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছিলেন না।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘদিনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এএফসি নামে ওই মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অভিযান চালানো হয়। সেখানে গিয়ে পর্দার আড়ালে আলাদা আলাদা কক্ষে স্কুল-মাদরাসায় পড়–য়া ৬জন ছেলে-মেয়েকে পাই। তাদের অবস্থা দেখে আপত্তিকর মনে হয়েছে। তাৎক্ষণিক ওই ছয় জনকে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ডেকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ইউএনও বলেন, মিনি চাইনিজটিতে মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার পাওয়া গেছে। কিচেনের পরিবেশ, ফ্রিজ এবং রান্নার উপকরণ মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর। এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তা অধিকার আইনে মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া, কক্ষে টাঙানো পর্দাগুলো জব্দ করা হয়েছে। চাইনিজটির মালিক মীর আজাদ রানা তার কর্মকান্ডের জন্য ভুল স্বীকার করেন।