বিলাল হোসেন মাহিনি
যশোর থেকে খুলনার ফুলতলা হয়ে রূপসা নদীতে মিলিত হয়েছে ভৈরব নদী। কিন্ত, দখল আর দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে ভৈরব নদী। অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসন নির্বিকার থাকায় অবৈধ দখরদাররা এ নদের দুই তীর দখল করে গড়ে তুলেছেন গুদাম, কারখানাসহ বহু স্থাপনা। অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া শহর রক্ষা ও পথচারীদের চলাচল সহজ করতে শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নদী তীরবর্তী ওয়াকওয়ে এখন ভাগাড়ের স্তুপে পরিণত হয়েছে। দখল, দুর্গন্ধ ও অব্যবস্থাপনায় ওয়াকওয়েতে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, কার্গোতে পণ্য ওঠা নামানোর জন্য নদীর মধ্যে বালু, ইট ও পাথর ফেলে পাকা ঘাট তৈরি করা হয়েছে। ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। তবে নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে কিছু ব্যবস্থা নেয় নওয়াপাড়া নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেও তেমন ফল মেলে না। ক’দিন যেতেই আবার যা তাই।
উল্লেখ্য, যশোরের অভয়নগর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ভৈরব নদ। উপজেলার রাজঘাট থেকে চেঙ্গুটিয়া নদের অংশে আগে থেকেই দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। সাথে রয়েছে ভয়াবহ দূষণ। কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য সরাসরি পড়ছে ভৈরব নদে। এ ছাড়া, নদে চলাচলকারি নৌযানের পোড়া তেল, নওয়াপাড়া শহর ও আশেপাশের মানুষের পয়ঃবর্জ্য ও গৃহস্থালীর বর্জ্যও পড়ছে এ নদে। এতে নদের পানি দূষিত হচ্ছে।
নদের সবচেয়ে বেশি দূষণ ঘটাচ্ছে দুটি ট্যানারি- এসএএফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও সুপারেক্স লেদার লিমিটেড। এ ছাড়া, মজুমদার গ্রুপের মিলসহ প্রভাবশালীদের সার-কয়লায় ভৈরবের দূষণ বাড়ছে। দখল-দূষণ রোধে ভৈরব নদীতে নৌকায় মানববন্ধন করা হয়েছে। সম্প্রতি ভবদহ পানি নিষ্কাশন ও কৃষি জমি রক্ষা জোটের আয়োজনে উপজেলার নওয়াপাড়া-শংকরপাশা খেয়াঘাটে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সচেতন মহলের দাবি, ভৈরব নদী ও সরকারের গড়া দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে রক্ষায় কর্যকর ভূমিকা রাখবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রশাসন।