ইসমাইল হোসেন
পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে ২০২২ সাল। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির দোলাচলে কালের আবর্তে মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে আরো একটি বছর।বিগত ২ বছর কাটলো আতঙ্ক, উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে।
প্রায় সারা বছরই থাকলো করোনাভাইরাসের মরণ-ভীতি।যার শুরু টা হয়েছিল ২০২০সালের একেবারে শেষ দিকে চীনের উহান শহরে যে ভাইরাস প্রথম সনাক্ত হয়েছিল, যা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে খুব সময় লাগেনি।স্বাস্থ্য সংস্থা ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে নতুন ভাইরাসটির নাম দেয় কোভিড-১৯।বিগত ২ বছর বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত শব্দ কোভিড-১৯ বা মরণব্যাধি করোনাভাইরাস।এই করোনা ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিকে পঙ্গু করেছে। বিশ্বকে একঘরে করে রেখেছিল এই মহামারি। এখনো দেশে দেশে চলছে করোনার চতুর্থ ঢেউ। প্রতিদিনই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যুবরণ করছে। নানা ধরনের দুর্যোগ-দুর্বিপাক, মহামারির অভিজ্ঞতা বিশ্ববাসী বয়ে চলছে। আরও কত মানুষের জীবন কেড়ে নিয়ে করোনা তার তাণ্ডব বন্ধ করবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
বিগত বছরগুলোর মতো ২০২২ সালেও ধারাবাহিকভাবে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, সহিংসতা, নৃশংসতা ও নির্মমতার মতো ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে দেশবাসী ও বিশ্ববাসীকে। নানা ঘটন-অঘটন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চড়াই-উতরাই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী হয়ে কালের গর্ভে সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেলো আমাদের কাছ থেকে ২০২২সাল। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রেক্ষাপটে নানা কারণেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে বছরটি।সামনে জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবার রাজনীতির মাঠে উত্তপ্ত উত্তেজনা বাড়ছে ক্রমশ। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
নতুন বছরটা হোক তরুণদের জন্য আশীর্বাদের বছর। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মকে ছাড়া দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।তরুণদের অগ্রাধিকার দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। আইন শৃঙ্গলা, অপরাধ দমন, নারী ও শিশু নির্যাতন, গুম-হত্যা, চুরি-ছিনতাই, সাইবার ক্রাইম, পারিবারিক অপরাধ’সহ যাবতীয় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করা এখন অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষে শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ, প্রশ্ন ফাঁস’সহ যাবতীয় অপরাধকে শূন্যের কোঠায় আনতে হবে। বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যা কে জনশক্তিকে রুপ দিতে দেশে ও আন্তজার্তিক মহলে শ্রমবাজারের দ্বার উন্মোচিত করতে হবে। সকল পর্যায়ে ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতি রোধকল্পে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। দারিদ্র্য হ্রাসসহ নানা সমস্যা সমাধানে সর্বপরি কাজ করে যেতে হবে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সাফল্য অর্জন করার জন্য ও সুনজর দিতে হবে। তবেই জঙ্গী, মাদক ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল এবং যুদ্ধাপরাধীমুক্ত স্বদেশ গড়ে তুলতে পারবো। সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে দেশ সেবায় আত্মনিয়োগের মধ্য দিয়েই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে সবাই মিলে।
ইসমাইল হোসেন
শিক্ষার্থীঃ- হাটহাজারী সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম