1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
আলাদা সাহিত্য মন্ত্রনালয় গঠন প্রসঙ্গে - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মাদক সেবনকালে ধরা প্রধান শিক্ষক,মোবাইল কোর্টে ১৫ দিনের কারাদণ্ড শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে “কথার কথা নয়, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন”-প্রধান উপদেষ্টা বুটেক্সে পাটশিল্পের উপর “হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও ফাতেমা আহমেদ ট্রাস্ট লেকচার–২০২৫” অনুষ্ঠিত   দৌলতপুরে বিশ্ব হাতধোয়া দিবস পালিত অভয়নগরে ট্রাকের ধাক্কায় অটোভ্যান আরোহীর মৃত্যু ঝিনাইদহে গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা, আগুনে দগ্ধ স্বামীও ওভারটেক করতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ভাঙ্গায় প্রাণ গেল এক যাত্রীর ১৬ অক্টোবর প্রকাশ হবে এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল রাজস্থানে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা: অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ গেল ২০ যাত্রীর

আলাদা সাহিত্য মন্ত্রনালয় গঠন প্রসঙ্গে

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ২০ মে, ২০২৩
  • ২৬৭ জন খবরটি পড়েছেন

বিলাল হোসেন মাহিনী

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি একে অপরের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। মানবিক সমাজ বিনির্মাণে জাতির শিল্পবোদ্ধারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। সেই চিন্তা থেকেই স্বাধীনতার পরের বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংস্কৃতি বিষয়ক বিভাগের কাজ শুরু করেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালেও আলাদা ‘সাহিত্য মন্ত্রনালয়’ এখনো গঠন করতে পারিনি আমরা। এদেশে সাহিত্যের হাজারো সংগঠন আছে। নিয়মিত সাহিত্যের চর্চাও হচ্ছে ঠিকই; কিন্তু এসকল সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য আলাদা মন্ত্রনালয় নেই। সরকারি সহায়তা ছাড়া কিভাবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌছবে?

ভাষাকে কেন্দ্র করে আজকের বাংলাদেশ; স্বতন্ত্র বাঙালি জাতি। ইতিহাস থেকে জানা যায়, খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার সূত্রপাত হয়। খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত বৌদ্ধ দোহা-সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। সে সময় লেখালেখি ও সাহিত্য বলতে মূলতঃ বিভিন্ন ধর্মের উপাখ্যান ও কাহিনীকেই বোঝানো হতো। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, বৈষ্ণব পদাবলি, নবীনামা, বিষাদ সিন্ধু ইত্যাদি সবই ছিল ধর্মাশ্রায়ী সাহিত্য। সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা, তাদের নিত্যদিনের কর্মব্যস্ততা, তাদের দুঃখ-বেদনা-আনন্দ-উচ্ছাস কিছুই তখন সাহিত্যের অনুসঙ্গ হতো না। আর আধুনিককালে শুধু মানুষ নয়, সমাজ এমনকি সমাজের বাইরের প্রতিটি জীব, বস্তু এমনকি ধূলিকণাও সাহিত্যের অনুসঙ্গ হতে পেরেছে। এটাই বাংলা সাহিত্যকে অনন্য উচ্চতায় দাঁড় করিয়েছে।

সাহিত্য শিল্পের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। আর শিল্পতো তাই, যা কিছু নবসৃষ্ট। আর সাহিত্য হলো এমন লেখনী, যেখানে শিল্পের বা বুদ্ধিমত্তার আঁচ পাওয়া যায়, অথবা যা বিশেষ কোনো প্রকারে সাধারণ লেখনী থেকে আলাদা৷ মোটকথা, ইন্দিয় দ্বারা জাগতিক বা মহাজাগতিক চিন্তা চেতনা, অনুভূতি, সৌন্দর্য ও শিল্পের লিখিত বা লেখকের বাস্তব জীবনের অনুভূতি হচ্ছে সাহিত্য। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘সত্য ও ধর্মই সাহিত্যের উদ্দেশ্য’। খ্যাতি বা অর্থের উদ্দেশ্যে লেখা নয়; লিখতে হবে মানুষের কল্যাণ সাধন কিংবা সৌন্দর্য সৃষ্টির অভিপ্রায়ে। নানাভাবে সাহিত্যের পরিচয় দেয়া যায়, ‘রহস্যময় জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে মনের যে নিবিড় অনুভূতি রসালো হয়ে শব্দের সরল প্রবাহে বাহ্যিক রূপ লাভ করে তাই সাহিত্য। তাছাড়া মানুষের সুখ-দুঃখের বিচিত্র অনুভূতির শিল্পময় প্রকাশকেও সাহিত্য বলে।’ ধরন অনুযায়ী সাহিত্যকে কল্পকাহিনী বা বাস্তব কাহিনি কিংবা গদ্য,পদ্য এই দুইভাগে ভাগ করা যায়। পদ্যের মধ্যে ছড়া, কবিতা ইত্যাদি, গদ্যের মধ্যে প্রবন্ধ, নিবন্ধ, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি শাখা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এছাড়াও অনেকে নাটক আলাদা প্রধান শাখা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেন। নাটকের মধে ‘নাটিকা, মঞ্চনাটক ইত্যাদিকে যুক্ত করা যায়। শুধু তাই নয়, টেলিফিল্ম ও সিনেমার গল্পটাও কিন্তু সাহিত্যের অংশ।

‘সাহিত্য’ নামে রবীন্দ্রনাথের ক্ষুদ্র একটি বই আছে। তাঁর মতে, ‘সাহিত্য’ সেটিই যেটি মানুষের ‘সহিত’ থাকে, অর্থাৎ সুখেদুঃখে, জীবনের নানা ওঠাপড়ায় যা মানুষকে আশাভরসা জোগায়, উচ্চতর চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করে, জীবনের ও জগতের নানা সৃষ্টির সৌকুমার্য উপলব্ধি করায়, যা মানুষকে মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করে, তাই সাহিত্য। ইংরেজি ‘লিটারেচার’ এর প্রতিশব্দ ‘সাহিত্য’ শব্দটি আমরা অনেকেই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সাহিত্য মানে সেই যা মানুষের জন্য সর্বজনীন স্বার্থ।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় : স্বাধীন জাতি হিসেবে বিদেশি রাষ্ট্রের সাথে সাংস্কৃতিক চুক্তি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রমের মাধ্যেমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য। আর এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ প্রহণ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় ১৯৭২ সালে ‘সংস্কৃতি ও ক্রীড়া’ বিষয়ক একটি বিভাগ গঠন করা হয়। আর তখন থেকেই দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকা- বিকাশে এ বিভাগ কাজ করছে। ১৯৭৮ সালে এ বিভাগকে ‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ হিসেবে নামকরণ করা হয়। এরপর ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্য়ন্ত ক্রিড়া, শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সাথে যুক্ত থাকার পর বর্তমানে ‘সংস্কৃতি’ আলাদা মন্ত্রনালয় হিসেবে কাজ করছে। এ বিভাগের অধীনে- জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, চারু-কারু ও ললিত কলার সংরক্ষণ, গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রত্নতত্ত্ব, স্থাপত্য ও ভাস্কর্য, একুশে ফেব্রুয়ারি পুরস্কার (একুশে পদক) প্রদান। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ক্ষেত্র সংক্রান্ত প্রকাশনার উন্নয়ন সাধন ও পল্লী সাহিত্য, পল্লী সংস্কৃতি ও পল্লী মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠাসহ নানা কাজ করা হয়। কিন্তু আজকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের যে ব্যাপকতা তাতে আলাদা ‘সাহিত্য’ মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি। যেখানে, সাহিত্যসেবী, শিল্পী প্রমুখদের উৎসাহিত করতে প্রশিক্ষণ, প্রকাশনায় সহায়তাসহ পাড়া-মহল্লায় সাহিত্য কেন্দ্র তথা গণপাঠাগার গড়ে তোলা হবে।

আজকের বাস্তবতা ও সাহিত্য মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা :

বর্তমানে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের অধীনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও গণগ্রন্থাগারের মাধ্যমে যেটুকু সাহিত্যের বিকাশ ও সাহিত্যিকদের সহযোগিতা করা হয়, তা নিতান্তই নগন্য। বিশেষ করে তা অপ্রতুল। শুধু তাই নয়, সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পল্লী অঞ্চলের শিল্পী, সাহিত্যিক, কলাকুশলিরা ন্যূনতম ডাকটুকুও পান না। জেলা সদর ও এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে পূর্ব সম্পৃক্তরাই সিংহভাগ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদেশে যে সকল গুণী এবং সম্মানিত লেখক দীর্ঘদিন যাবত বাংলা সাহিত্য নিয়ে চর্চা করে মূল্যবান সময় ব্যয় করে আসছেন তারা যেনো কান্ডারী বিহীন তরী নিয়ে অথৈ নদে ভাসছেন। বিশেষ করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের তৃণমূল পর্যায়ের লেখকেরা সর্বদা অবহেলিত থেকে যায়। অনেকের মধ্যেই অগাধ পা-িত্য ও প্রতিভা থাকলেও তা বিকশিত করার সঠিক প্লাটফর্ম না পাওয়ার কারণে মুকুলেই ঝরে যায় তাদের সম্ভাবনা ও স্বপ্ন। আজ যদি সাহিত্য মন্ত্রনালয় থাকতো তবে, বংলাদেশের দেশের প্রতিটা লেখকের সুখ-দুঃখের কথা সেখানে যত্ন করে সংরক্ষণ করা যেতো। তাই কবি সাহিত্যিকদের সঠিক সম্মান প্রদর্শন করতে এবং সঠিক মূল্যায়ন করতে এই মুহুর্তে দেশে সাহিত্য মন্ত্রণালয় গঠনের কোন বিকল্প নেই। সাহিত্য বোদ্ধা ও প্রেমীদের প্রতি উদাত্ত আহবান, আসুন বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সাহিত্য সংগঠন সম্মিলিতভাবে এই দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরি। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা ও অভিলাষ ত্যাগ করে আগামি প্রজন্মের জন্য ‘সাহিত্য’ মন্ত্রনালয় গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখি। ভেদাভেদ ভুলে যাই, হয়ে যাই ভাই ভাই। এই প্রত্যাশায়…।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews