1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
সাম্প্রদায়িকতা নয় : সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি: নিহত ৫ ‘যে গাছে ফরহাদের ছবি আছে, সেই গাছের নিচে শপিং ব্যাগে টাকা রেখে যাবি’ জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রশিবিরের “জুলাই দ্রোহ” বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে প্রথম সভা করলেন নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ শেরপুর–মৌলভীবাজার মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় যুবক নিহত ‘কিলার গ্যাং’ প্যাডে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবি, পুলিশের হাতে ৫ জন প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা ‘বৈষম্যমূলক’ নয়, ব্যাখ্যা দিল মন্ত্রণালয় ফ্লাইট এক্সপার্ট হঠাৎ বন্ধ, মালিক দেশত্যাগের অভিযোগ অভয়নগরে বিএনপির উদ্যোগে যৌথ প্রস্তুতিমূলক সভা এক বছর ম্যাচই খেলেননি, তিনিই বর্ষসেরা ক্রিকেটার

সাম্প্রদায়িকতা নয় : সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২২৮ জন খবরটি পড়েছেন
ছবি-সংগৃহীত
বিলাল মাহিনী

বিলাল হোসেন মাহিনী। জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের স্লোগান ‘লাখো শহিদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না’; সুতারাং এই দেশে সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু বলে বিভক্তির দিন শেষ। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষের বিভক্তির দিনও শেষ। আমার বাংলাদেশে একই সাথে, একই সময়ে পবিত্র রমজান ও দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়। মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজের আযান হয় একই সময়ে সনাতন ধর্মের দিদিরা উলুধ্বনি দেয়। দেশটা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, উপজাতি, নৃগোষ্ঠীসহ সবার, সব ধর্ম বর্নের মানুষের। দিন শেষে আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি; বাঙালি।

এ দেশের মানুষের মধ্যে কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু আবার কেউ বৌদ্ধ-খৃষ্টান-উপজাতি-আদিবাসি বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বি। অতএব একজন বাঙালি মুসলিম মসজিদে যাবে, বাঙালি হিন্দু যাবে মন্দিরে, অন্যান্য ধর্মের কেউ কেউ প্যাগোডা বা চর্চে অথবা নিজ নিজ উপাসনালয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক নয় কি! মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রে প্রত্যেক জনগোষ্ঠী তার নিজ ধর্ম-কর্ম সানন্দে পালন করবে কোনোরূপ বাধা বা প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে এ দেশের তরুন মুসলিমরা হিন্দুদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিয়েছে। এ দেশ কোনো ধর্মীয় মৌলবাদীদের নয়। আমরা সবাই এদশের নাগরিক। অধিকার সবার সমান।

বাংলার বিখ্যাত পন্ডিত ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা হিন্দু ও মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।’ তাই আমাদের আগে বাঙালি হতে হবে। কোনো বিশেষ ধর্ম-দর্শন যেনো আমাদের সংকীর্ণ বা আত্মঘাতী না করে তোলে; সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। উদারতা ও পরমতসহিষ্ণুতা যেনো আমাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির মূলকথা হয়। ধর্মীয় উগ্রতা বা সাম্প্রদায়িকতা শুভ প্রবনতা নয়। এর ফলে সামাজিক সহনশীলতা বিনষ্ট ও ধর্মীয় পবিত্রতা ম্লান হয়। তাই এ সকল অশুভ প্রবণতা থেকে সমাজকে মুক্তি দিতে হবে। তবে তা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য সমাজের সকল সচেতন মানুষকে দলমত ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এগিয়ে আসতে হবে। যারা আমাদের সভ্যতা ও মনুষ্যত্বের প্রতিপক্ষ তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

সাম্প্রদায়িক বিভেদ নিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বহু আগেই বলে গেছেন, ‘ভূতে পাওয়ার মতো ইহাদের মন্দিরে পাইয়াছে, ইহাদের মসজিদে পাইয়াছে। ইহাদের বহু দুঃখ ভোগ করিতে হইবে। যে দশ লক্ষ মানুষ প্রতি বৎসর মরিতেছে শুধু বাংলায়, তাহারা শুধু হিন্দু নয়, তাহারা শুধু মুসলমান নয়, তাহারা মানুষ-স্রষ্টার প্রিয় সৃষ্টি।’ বর্তমান সময়ের জন্য দার্শনিক লিও টলস্টয়ের একটি মন্তব্য খুবই প্রযোজ্য। বিশ্বখ্যাত এই সাহিত্যিক বহু বছর আগে বলেছিলেন, ‘একটি দেশকে ধ্বংস করতে হলে সে দেশের মানুষের মধ্যে ধর্মের নামে লড়াই লাগিয়ে দিলেই হবে।’ এছাড়াও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বহুবার এবং বহুভাবে ধর্মের বাড়াবাড়ি নিয়ে বাঙালিকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন- ‘ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে/ অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে।’ সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাত নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে বহু সাধারণ মানুষ। তবে আশার কথা হলো, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন। মনে রাখতে হবে, সাধারণ মানুষ কখনোই সংঘাত চায় না, করেও না; সহিংসতা করে স্বর্থান্বেষী ও কুচক্রী মহল। সম্মিলিতভাবে তাদের সমাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে মোকাবেলা করা সময়ের দাবি।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে জোরজবরদস্তি নেই। ভ্রান্ত মত ও পথকে সঠিক মত ও পথ থেকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেয়া হয়েছে’ (সূরা বাকারা, আয়াত ২৫৬)। সুতরাং ‘তোমাদের ধর্ম তোমাদের জন্য, আমাদের ধর্ম আমাদের জন্য’ (সূরা কাফিরুন, আয়াত ৫)। ইসলামে অপর ধর্মের উপাসনালয় ভাঙ্গা বা ক্ষতিসাধন করা দূরে থাক, কোনোরূপ ক্ষতি সাধনের চিন্তা করাও হারাম। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহকে ছেড়ে তারা যাদের (দেবদেবীর) আরাধনা করে, তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না (গালি দিও না)। তাহলে তারা ধৃষ্টতা দেখাতে গিয়ে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গাল-মন্দ করবে’ (সুরা আনআম : আয়াত ১০৮)। বরং সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিমদের দায়িত্ব হলো, অপর ধর্মের উপাসনালয় পাহারা দেওয়া, যাতে তারা স্বাচ্ছন্দে আরাধনা বা প্রার্থনা করতে পারে।

ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সা. বলেছেন, ‘যারা মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ডাকে, সাম্প্রদায়িকতার জন্য যুদ্ধ করে, সংগ্রাম করে এবং জীবন উৎসর্গ করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫১২৩)। বাংলাদেশ রাষ্ট্র বিনির্মানে, বিশেষ করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান- সকলের রক্ত ঝরেছে। সেই রাষ্ট্রে কেনো সকলের সমান নিরাপত্তা থাকবে না? স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের পথে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। এই প্রত্যাশায়–।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews