রফিকুল ইসলাম দেবহাটা প্রতিনিধি। উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সাদপন্থীদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে, দেবহাটা উলামা পরিষদ ও তৌহিদী জনতার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার পারুলিয়া বাস স্ট্যান্ড চত্বরে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে ক্বারি ফজলুল হক আমিনীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মুফতি আব্দুস সবুর, মাওলানা আশরাফ হোসেন, মাওলানা আব্দুর রহমান প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন, ঢাকা টঙ্গীর ময়দানে তাবলীগের সহস্রাধিক সাথী ও উলামায়ে কেরামের উপস্থিতে বিশ্ব ইজতিমা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সারাদিনের অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে যখন তারা ঘুমিয়েছিলেন, তখন গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ বুধবার ভোররাতে তাদের উপর নৃশংস আক্রমণ করে দিল্লির মৌলভি সাদের অনুসারী সন্ত্রাসী উগ্র বেদআতি গোষ্ঠী। এ সময় তারা রামদা, ছুরিসহ বিভিন্ন রকম দেশি-বিদেশি ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। তাদের আঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত চারজন সাথী শহীদ হয়েছেন, বলে পত্রিকায় এসেছে। শত শত সাথী মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন। যাদের অনেকের অবস্থা আশংকাজনক। ইতোমধ্যে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে টঙ্গীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে।
সাদপন্থীদের এই বর্বরতা ও নৃশংসতা নতুন নয়। এর আগেও তারা ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ইজতিমা ময়দানে মেহনতরত সাথীদের ওপর এমন নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে হাজার হাজার সাথী, বয়োবৃদ্ধ মুরুব্বি, আলেম ও মাদরাসা ছাত্রদের হতাহত করেছিল। কারবালার মতো রক্তের স্রোতে ভিজে গিয়েছিল ইজতিমা ময়দান। তবে আশ্চর্য হলেও সত্য যে, সদ্য বিদায়ী স্বৈরশাসকের সাথে তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ঘনিষ্ঠতা থাকার কারণে সেই ঘটনার আজও কোনো সুষ্ঠু বিচার হয়নি। তাদের এ জাতীয় বর্বরতা দেশ-বিদেশের শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের মনে ঘৃণার স্রিইষ্টি করে। তাই তাবলীগের নামে সাদপন্থীদের এ জাতীয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আমাদের বাংলাদেশে কিছুতেই চলতে দেয়া যায় না। তাবলীগের এ মহান কাজের সূচনা উলামায়ে কেরামের মাধ্যমেই হয়েছিল। তাই ভবিষ্যতেও আলেমদের তত্ত্বাবধানের বাইরে এই মহান কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে না। আলেমদের বাদ দিয়ে এই কাজ পরিচালনা করলে গুমরাহি সৃষ্টির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। যার প্রমাণ, সাদপন্থীদের সাম্প্রতিক অপতৎপরতা ও নৃশংসতা। তাই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিকট শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতার পক্ষ থেকে আবেদন এই যে, আজ থেকে উগ্রবাদী সাদপন্থীরা তাবলীগের নামে সাতক্ষীরা জেলা-সহ সারা দেশের কোনো মসজিদে ও মারকাযে তাদের কোনো ধরনের কার্যক্রম যেন চালাতে না পারে। এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলের সজাগ দৃষ্টি ও সর্বোচ্চ প্রতিরোধী ভূমিকা পালন করা ঈমানী দায়িত্ব।
এছাড়াও উক্ত মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, মুকতি আব্দুল হালিম, মুকতি কামালনূদ্দিন মুকতি আবু সাঈদ, মুকতি শহিদুল ইসলাম মুকতি হারুনূ রশিদ, কারি শরিফুল ইসলাম টুটুল কারি আবু নাঈম, কারি জামিনূর রহমান সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।