রফিকুল ইসলাম দেবহাটা প্রতিনিধি। এক সময় মাঠ ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, আর গোলাভরা ধান গ্রামের সম্ভ্রান্ত কৃষকের পরিচয় বহন করত। সভ্যতার বিবর্তনে আর আধুনিক কৃষি সংক্ষণের পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে হারাতে বসেছে কৃষকের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা।
দেবহাটা উপজেলা সহ বিভিন্ন গ্রামে এক সময় সম্ভ্রান্ত কৃষকের বাড়ীর উঠানে শোভা পেতো ধান রাখার এই গোলাঘর এখন সেটা আর চোঁখে পড়েনা সেটা বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। বাঁশ দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি গোল আকৃতির কাঠামোই “গোলা ছোট বড় মানের ভেদে ১০০ থেকে ৩০০ মন ধান সংরক্ষন করা হতো এই গোলায়।
উত্তর সখিপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ বলেন আমরা সেই ছোট থেকে দেখে আসছি গ্রামে যাদের অনেক ধান হতো তারা সেগুলা সংরক্ষণ করে রাখার জন্য এই গোলার ব্যবহার করতো, কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই গোলা ঘর এর প্রয়োজন হয় না।
সখিপুর গ্রামের বাঁশের গোলা তৈরি মিস্ত্রি বক্স কারিগর বলেন,আমি আশি- নব্বই দশকের দিকে গোলা তৈরির কাজ করতাম তখন একটি গোলা তৈরি করতে খরচ হত সেই সময়ের টাকা ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা,যা এখন তৈরি করতে গেলে যা খরচ হবে প্রায় ১লক্ষ থেকে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতো। আর এখন তো আর গোলা বান্ধার কাজ হয় না। যার কারণে অন্য কাজ খুঁজতে হচ্ছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শাহিনা খাতুন বলেন বর্তমান সময় মানুষ এখন অনেক আধুনিক হয়েছে। এখন যেমন মানুষ কোন কিছু সংরক্ষন করার জন্য চটের বস্তা,পলিথিনের বস্তায় কিংবা প্লাসটিকের ড্রাম ব্যকবহার করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন আমি বা আমরা হয়তো কিছু দিন গোলা এর ব্যবহার দেখছি, কিন্তু বর্তমান জেনারেশন এর ব্যাবহার কি ভাবে করতে হয় সেটাও জানে না। বর্তমান সময় গোলা তেমন কোন প্রয়োজন হয়না কারণ গোলা ঘরে ফসল সংরক্ষণ করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে,বর্তমান বিশ্ব উন্নত হয়েছে তাই এর ব্যাবহার কমে গেছে,তবে আমি চাই আমাদের গ্রাম গঞ্জে যাদের বাড়ির এখনো গোলা আছে সেটা কি ভাবে সংরক্ষণ করা যায় সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।