রাকিবুল হাসান, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় সরকারি প্রণোদনার সার-বীজ বিক্রির সময় একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে স্থানীয় লোকজন আটক করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, কর্মকর্তা সরকারি সহায়তা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিলেন।
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কৃষকদের সরকারি প্রণোদনার ৫ প্যাকেট সবজি বীজ ও ১২০ কেজি সার কীটনাশকের দোকানে বিক্রির সময় আতোয়ার রহমান নামের এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে আটক করেছেন স্থানীয় লোকজন। রোববার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে কৃষকদের মধ্যে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। দুপুরে প্রণোদনের পুষ্টি বাগানের সবজির বীজ ও সার তুলে জোড়গাছ বাজারের ‘মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্স’ নামের একটি কীটনাশকের দোকানে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন আতোয়ার রহমান। পরে আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে সার, বীজসহ তাঁকে আটক করেন।
দুপুরে জোড়গাছ বাজারে ওই দোকানে গিয়ে দেখা যায়, কীটনাশকের দোকানের ভেতরে পুষ্টি বাগানের জন্য ৫ প্যাকেট সবজির বীজ ও ৫ বস্তা (২৪ কেজির বস্তা) সার দেখতে পাওয়া যায়। পরে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান বেলা দেড়টার দিকে কৃষি কার্যালয় থেকে অটোতে করে সার ও বীজ বিক্রি করার জন্য দোকানে নিয়ে আসেন। তাঁরা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁকে হাতেনাতে আটক করেন। কৃষকের সার ও বীজ বিতরণে কারচুপি করে এভাবে দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তি ছাড়াও আরও অনেকেই জড়িত থাকার সম্ভাবনা আছে। সঠিক তদন্ত করে তাঁকে আইনের আওতায় আনতে পারলে কৃষকের সার-বীজ সংকট কেটে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্সের মালিক ফারুক ইসলাম বলেন, ‘আমার সারের দোকানে ওই কর্মকর্তা অটোতে করে সার এবং বীজ নিয়ে আসেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু সরকারি সার-বীজ দোকানে নিয়ে এসেছে, অবশ্যই বিক্রির জন্যই এনেছিল। তবে তিনি আগে থেকে তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি।
অভিযুক্ত আতোয়ার রহমান বলেন, ‘আমি নিয়ে আসিনি। পুষ্টি বাগানের বীজ ও সার কৃষকেরা কৃষি কার্যালয় থেকে তুলে এনে নিজেরাই ওই দোকানে রেখেছেন। তাঁরা আগামীকাল নিয়ে যাবেন।’
জানতে চাইলে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষণ দাস বলেন, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে ওই দোকান থেকে সার ও বীজ জব্দ করে নিয়ে আসেন।
কুড়িগ্রাম খামারবাড়ির উপপরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিকেলে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাঁকে বিষয়টি জানান। কাল জেলা থেকে দুজন কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাটি তদন্তের জন্য সেখানে যাবেন। কৃষকের প্রণোদনার সার-বীজ বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।