রফিকুল ইসলাম দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি। মাদক খাওয়ার প্রতিবাদ কে কেন্দ্র করে দু, গ্রুপের মারামারি,সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদকারী চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষ ৩ যুবককে চৌকিদার বাহিনী দিয়ে বাড়ি থেকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদে এনে দড়ি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক পেটানোর প্রতিবাদে চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানের শাস্তি দাবী করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ থানা সড়কের প্রেসক্লাব সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পার্ক এলাকায় নলতা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আয়োজনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে ভুক্তভোগী অহিদুল ইসলাম ,আবু হুরায়রা, মমিনুর রহমান সহ সেহারা গ্রামের হেলাল হোসেন, নাসির হোসেন, রফিকুল ইসলাম ,জাহাঙ্গীর আলম সহ একাধিক ব্যক্তি তাদের বক্তব্যে বলেন গত রবিবার রাত আনুমানিক ৭ টার দিকে সেহারা গ্রামের বিলের মৎস্য ঘেরের বাসায় স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের সমর্থক মাদকাসক্ত শরিফ, রেজা, সাদ্দাম হোসেন বসে গাজা সেবন করছিল । ঐ সময় সেহারা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের পুত্র অহিদুল ইসলাম প্রতিবাদ করায় তাকে বেধড়ক মারপিট করে । উক্ত ঘটনা জানতে পেরে তার সহপাঠী একই গ্রামের মমিনুর রহমান, হেলাল হোসেন, আবু হুরায়রা ,নাসির হোসেন ওই বাসায় যেয়ে প্রতিবাদ করা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারপিট সংঘটিত হয় ।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ১ নং ওয়ার্ডের ইউ,পি সদস্য হাবিবুর রহমান এবং তার পক্ষের ভুক্তভোগীরা বিষয়টি নলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে জানায় । চেয়ারম্যান গত বুধবার বেলা ১১ টার দিকে ৮/৯ জনের একটি চৌকিদারের দল পাঠিয়ে বাড়ি থেকে অহিদুল ,আবু হুরায়রা এবং মমিনুর কে ধরে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে নিয়ে আসে এবং চেয়ারম্যানের নির্দেশে এই ৩ জনকে বেঁধে ফেলা হয়। এবার চেয়ারম্যান নিজে লাঠি দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাদের পিতা-মাতার সামনে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে বেলা ১২ টার দিকে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনা জানাজানি হলে নলতা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের জনগণ ফুসে ওঠে এবং এর প্রতিবাদে বিকালে কালিগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান এবং ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের শাস্তি দাবী করে প্রতিবাদ , বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান এলাকার অহিদুল আবু হুরায়রা মমিনুর সহ বেশ কয়েকজন মাদকাসক্ত যুবক এলাকায় চাঁদাবাজি ঘের দখল সহ বিভিন্ন দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত থাকে এই সমস্ত কাজে প্রতিবাদ করায় গত ২/৩ দিন আগে ৩ জনকে মারধর করে। উক্ত ঘটনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান চৌকিদার দিয়ে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায় এর বেশি আমি কিছু জানিনা।
চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানের নিকট সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তার ব্যবহৃত ০১৭৪০৮০৩০২০ নং জানায় অহিদুল, আবু হুরায়রা, মমিনুল, নাসির ,হেলাল সহ বেশ কিছু চাঁদাবাজ ,সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ এলাকায় চাঁদাবাজি, ঘের দখল মাদক কারবারে লিপ্ত । এ সংক্রান্ত বিষয়ে চৌকিদার পাঠিয়ে তাদেরকে ধরে আনা হয়। তবে নির্যাতনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। ধরে এনে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বিষয় সম্পর্কে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন – অর রশিদের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান এ বিষয়ে কোন অভিযোগ এখনো পর্যন্ত হাতে পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।