সরকারি কর্মচারীদের জন্য চালু হতে যাচ্ছে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এই ভাতা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব বিবেচনায় রেখেছে অর্থ বিভাগ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুলাই থেকে এটি কার্যকর হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন সাপেক্ষে বাজেট ঘোষণার সময় মহার্ঘ ভাতা চালুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। প্রাথমিকভাবে ১ থেকে ৯ম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য ১০-১৫ শতাংশ এবং ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের জন্য ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই ভাতা চালু হলে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে বেতন-ভাতা খাতে Tk ৮২,৯৯০ কোটি বরাদ্দ রয়েছে, যা নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী Tk ৯৭,০০০ কোটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
এ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ২০ মে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মহার্ঘ ভাতার হার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর থেকে সুপারিশ নেওয়া হয়েছে এবং প্রস্তাব তৈরির কাজ চলছে।
তবে ডিএ চালু হলে বাতিল করা হবে বর্তমানে প্রচলিত ৫% বার্ষিক বিশেষ প্রণোদনা, যা শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে চালু হয় এবং ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে মূলত অষ্টম বেতন কাঠামোর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট নীতিতেও পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে একটি কমিটি গঠন করে মহার্ঘ ভাতা চালুর প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে অর্থনৈতিক চাপে সরকার সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে। এতে প্রশাসনের মধ্যে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। এবার সেই অসন্তোষ প্রশমনে আবারও মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্ত নতুনভাবে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা জনগণের জন্য এটি একটি স্বস্তিদায়ক পদক্ষেপ হতে পারে, তবে সরকারের সামষ্টিক ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখাও হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।