ডেস্ক নিউজ।
আজ পহেলা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। নতুন বছরকে ঘিরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। বাঙালির চিরন্তন সাংস্কৃতিক উৎসব বাংলা নববর্ষ এবার এসেছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে—৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন ধারার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের প্রত্যাশা নিয়েই উদযাপিত হচ্ছে এ উৎসব।
বাংলা নববর্ষ ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত একটি উৎসব—যার সূচনা হয়েছিল কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের প্রয়োজনে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি রূপ নেয় জাতিগত ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীকে।
নতুন বছরের প্রথম দিনে বাঙালি জাতি পুরোনো দুঃখ-বেদনা ভুলে নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নেয়। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়—‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা’—এই চেতনায় উদ্ভাসিত হয় দিনটি। নজরুলও লিখেছেন, “তোরা সব জয়ধ্বনি কর”—একই আত্মবিশ্বাসের প্রতিধ্বনি হয়ে।
এ দিনেই রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, আনন্দ শোভাযাত্রা, হালখাতা ও বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষত পাহাড়ি এলাকায় বৈসাবি, বিজু প্রভৃতি উৎসব উদযাপনের মধ্য দিয়ে এই দিনটিকে ঘিরে ওঠে উৎসবের জোয়ার।
নববর্ষ শুধু একটি দিনের আনন্দ নয়—এটি দেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে বৈশাখী মেলার মাধ্যমে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়, হস্তশিল্পে আসে নতুন গতি। শহরে বুটিক ও ফ্যাশন শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ায় নগরজীবনেও নববর্ষের ছোঁয়া পড়ে।
বাংলা নববর্ষের আবেদন সর্বজনীন ও চিরন্তন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবে শামিল হন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছে পহেলা বৈশাখ।
বছরের প্রথম দিনটি প্রতিটি বাঙালির জীবনে নতুন আশার, নতুন আলোর বার্তা নিয়ে আসে। দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মঙ্গল কামনায় উদযাপিত হয় এই বিশেষ দিনটি।