নাজমুস সাকিব আকাশ।।
ধান খেতের মাঝে পড়ে আছে মিরাজ হোসেনের কাদা মাখা নিথর দেহ। দেহের পাশেই তেলের বোতল, কোদাল ও কাঁচি। মাদরাসা ছাত্র মিরাজ পবিত্র কোরআনের একজন হাফেজও। তাঁর কন্ঠে শোনা যাবে না আর মধুর কোরআন তেলাওয়াত। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সাথে মুখরিত সময়ও হবে না পার। সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি আজ চলে গেছেন বহুদূরে, না-ফেরার দেশে।
যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা মিরাজ হোসেন (১৯)। সোমবার (২১ মার্চ) এনায়েতপুর মাঠে তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিরাজের বাবা এনায়েতপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন। খাজুরা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি।
মিরাজের বোন রিক্তা খাতুন জানান, সোমবার সকাল ৯টায় মিরাজ ও ছোটভাই জাহিদ মাঠের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এর মধ্যে মিরাজ যান মাঠের এক প্রান্তে ধান খেত পরিচর্যা করতে ও পানি দিতে। আর জাহিদ মাঠের অন্য প্রান্তে আরেকটি ধান খেতে বাবা ও বড়ভাই বিপুলের জন্য ভাত নিয়ে যায়। কাজ শেষে দুপুরে তাঁরা বাড়ি ফিরলেও মিরাজ বাড়ি ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে মাঠে ওই ধান খেতের মাঝে মিরাজের কাঁদা মাখা নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন ছোটভাই জাহিদ।
রিক্তা আরো জানান, তাঁর ভাইয়ের পিঠের একাংশ জুড়ে আগুনে পোড়ার মতো হয়ে গেছে। মাগরিব বাদ জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
এদিকে, মিরাজের অকাল মৃত্যুতে শুধু তাঁর বাড়ি নয়, গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসছে। অস্বাভাবিক এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ।