শাহীন আহমেদ রাজ,সাভার উপজেলা প্রতিনিধি।।
সাভারের আশুলিয়ায় বারংবার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান পরিচালনা করেছে সাভার তিতাস অফিস।
কিন্তু কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না এ সকল অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের। ঘুরেফিরে একই এলাকায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেছে সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ রয়েছে, তিতাস গ্যাস অফিসের একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ অবৈধ সংযোগের সঙ্গে জড়িত। ফলে কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ গ্যাস সংযোগ।
বুধবার(৩০শে মার্চ) সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আশুলিয়ার কাঠগড়া বেঙ্গল মোড় থেকে শুরু করে নিক্কণ হাউজিং মাঠ পর্যন্ত, এক থেকে দেড় কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনা করে তিতাস। তিতাসের সাভার জোনাল বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোঃ সায়েম এর নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
এর আগে একই জায়গায় দুই থেকে তিনবার অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদের অভিযান পরিচালনা করে তিতাস গ্যাস কোম্পানির সাভারের অফিস। অভিযোগ রয়েছে, সকালে কেটে গেলে রাতেই পুনরায় অবৈধ সংযোগ চালু হচ্ছে এ সকল এলাকায়। শতশত লাইন ও মাইলের পর মাইল অবৈধ গ্যাস লাইনের পাইপসহ গ্যাসের চুল্লি জব্দ করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে অবৈধ সংযোগদাতা মূল হোতারা। এতে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারকারিরা। লাইনে নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের প্রেসার থাকায়, অতিরিক্ত অবৈধ লাইন সংযোগের ফলে বৈধ সংযোগকারীরা পাচ্ছে না চাহিদা মোতাবেক গ্যাস।
নিক্কন হাউজিং এলাকার নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা সকালের খবর ২৪ডটকমকে বলেন,
অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিষয়টি একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।তিতাস গ্যাসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় কিছু অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ এলাকা থেকে বারবার বিপুল পরিমানের অর্থ উঠিয়ে অবৈধ লাইন সংযোগ দিচ্ছে। যেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়ে নিজেদের পকেট ভরছে। আমরা না চাইলেও কিছু কিছু সময় বাধ্য হয়ে তাদেরকে টাকা দিতে হয়। আর বারবার লাইন না কেটে আমাদের লাইনগুলো বৈধ করে দিক। না হয় যারা আমাদের কাছ থেকে বারবার টাকা নিচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসুক।
এ ব্যাপারে সাভার তিতাস অফিসের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মান্নান সকালের খবর ২৪ডটকমকে বলেন,
অবৈধ গ্যাস সংযোগের খবর পাওয়া মাত্রই আমরা অভিযান পরিচালনা করছি এবং অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের চিহ্নিত করার কাজ অব্যাহত রয়েছে। আজকে আমরা যেখানে অভিযান চালিয়েছি এর আগে এখানে কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন আজকের অভিযানে কাউকে জরিমানা অথবা আটক করা হয়নি শুধুমাত্র লাইনের পাইপ জব্দ করা হয়েছে।
বারংবার অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও বিচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস কোম্পানির সাভার অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোঃ সায়েম সকালের খবর ২৪ডটকমকে বলেন, আশুলিয়ার কাঠগড়ার বেঙ্গলমোড় ও নিক্কণ হাউজিং মাঠ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৫০০ বাসাবাড়ির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কুচক্রি মহল আমাদের মূল সরবরাহ লাইন থেকে নিম্নমানের এবং ঝুঁকিপূর্ণ পাইপ ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে অবৈধ সংযোগ দিয়েছে। অভিযানে ওইসব লাইন বিচ্ছিন্নসহ পাইপলাইন তুলে ফেলেছি। যারা অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, তিতাসের সাভার জোনাল বিপণন অফিসের উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ আনিসুজ্জামান রুবেল ও ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মান্নানসহ তিতাসের কারিগরী টিমের সদস্যগণ।
ঘটনাস্থলে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন ছিল।