বাগেরহাট প্রতিনিধি।।
বাগেরহাটের শরণখোলায় অফসিজনে তরমুজ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। খরিপ মৌসুমে প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই প্রথম অফসিজনে রসালো তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন বিপুল চন্দ্র মাঝি। অসময়ে তরমুজ চাষে প্রচুর পরিমাণ ফল ধরায় বিপুলের চোখে মুখে এখন শুধুই হাসির ঝিলিক।
আগামী মৌসুমে অধিক লাভ জনক এ তরমুজ চাষ অনেক চাষি করবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ। উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোস্তফা মশিউল আলম বাবু জানায়, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিযোজন প্রকল্প আওতায় খরিপ-১ মৌসুমে এই প্রথম তরমুজের চাষ হয়েছে।
প্রদর্শনী চাষী হিসেবে উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের সফল চাষি বিপুল চন্দ্র মাঝিকে কৃষি বিভাগ থেকে সুপার কিং জাতের তরমুজের বীজ বিভিন্ন প্রকার সার প্রদান করা হয়। তরমুজ চাষী বিপুল চন্দ্র মাঝি এ প্রতিনিধিকে বলেন, তিনি দীর্ঘ বছর ধরে কৃষি কাজের সাথে জড়িত। আমার অনেক দিনের আশা তরমুজ চাষ করার। কৃষি বিভাগ থেকে পাওয়া বীজ ট্রেতে বসিয়ে চারা তৈরি করি। প্রায় ৩৩ শতক মৎস্য ঘেরের পাড়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শে মাদা তৈরি করে চারা রোপণ করি।
বর্ষা মৌসুম হলেও অনাবৃষ্টির কারণে অনেক দূরে সরকারি পুকুর থেকে কলসিতে করে পানি সংগ্রহ করে সেচের ব্যবস্থা করায় তরমুজ গাছ সুন্দর ভাবে বেড়ে ওঠে। তরমুজ গাছে দুমাসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফুল ধরতে শুরু করে। এখন গাছে শুধু তরমুজ আর তরমুজ। পাকাও শুরু হয়েছে। পাঁচ সাতদিন হয়েছে তরমুজ ৬০/৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এলাকার আমতলি খালটি ভরাট হওয়ায় পানি ওঠা-নামা মারাত্মক ব্যহত হচ্ছে। ফলে শত শত কৃষক পানির জন্য চাষাবাদে মারাত্মক ভাবে বিঘ্ন ঘটছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
শরণখোলা উপজেলা কৃষি অফিসার দেবব্রত সরকার এফএনএসকে বলেন, তরমুজ চাষ লাভ জনক ফসল। সাধারণত তরমুজের ব্যাপক চাষ হয় ফেব্রুয়ারি মাসে কিন্তু চলতি খরিপ মৌসুমে এ উপজেলায় এই প্রথম তরমুজ চাষ করে লবনমুক্ত পানি ব্যবহার ও নিবিড় পরিচর্যায় বিপুল চন্দ্র মাঝি ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো ৪ জন চাষিকে তরমুজ চাষের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে বিপুলের ক্ষেত সবচেয়ে ভালো হয়েছে। আশা করছি আগামী মৌসুমে অনেক চাষি তরমুজ চাষ করবে। কারণ অল্প খরচে অধিক লাভ। অপরিকল্পিত ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও স্লুইজগেট নির্মান করায় চাষিরা সঠিক সময় পানি না পেয়ে নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।