অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ আসনে অভয়নগর উপজেলার আড়পাড়া ভোটকেন্দ্রে প্রায় ১০০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ বাঁকে করে এসে ভোট দিয়েছেন। তবে তিনি কোন প্রতীকে ভোট দিয়েছেন তা জানা যায়নি। ওই ব্যক্তির নাম হরেন্দ্রনাথ মজুমদার।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তিনি ভোটকেন্দ্রে আসেন। ভোট দিতে পেরে তিনি খুশি।
জানা গেছে, হরেন্দ্রনাথ মজুমদার নিজে চলাচল করতে পারেন না। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তিনি ভোট দিতে আসেন। তার বাড়ি উপজেলার রামসরা গ্রামে।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বিঘ্নে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। দীর্ঘদিন পর মানুষ এত সুন্দর পরিবেশে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার বলেন, ‘অনেক দিন পর এত সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পেরে খুবই আনন্দিত।’ এ আসনে কার জেতার সম্ভাবনা বেশি, সেই প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, আমরা যে নেতাকে চেয়েছিলাম, তিনি এবার প্রার্থী হয়েছেন। আমরা পরিবারের সবাই তাকেই ভোট দিয়েছি।
অভয়নগর ও বাঘারপাড়া উপজেলা এবং বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত যশোর-৪ আসনে দুপুর ২টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। সকাল ৯টার দিকে নওয়াপাড়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড শরখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন যশোর-৪ আসনে নৌকার মাঝি এনামুল হক বাবুল।
ভোটকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে এনামুল হক বাবুল বলেন, ভোটের প্রচারের সময় যেভাবে মানুষের ভালোবাসা, দোয়া ও আশীর্বাদ পেয়েছি, তাতে আমি শতভাগ আশাবাদী এই আসনে নৌকা জয়ী হবে। তিনি বলেন, অত্যন্ত সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটারদের রায় মাথা পেতে নেব।
অভয়নগর ও বাঘারপাড়া উপজেলা এবং সদর উপজেলার একাংশ বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৪ আসন গঠিত। নৌকার এনামুল হক বাবুল ছাড়া আরও পাঁচ প্রার্থী নির্বাচনে রয়েছেন। তারা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রণজিৎ কুমার রায় (ঈগল), জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) জহুরুল হক, বিএনএমের সুকৃতি কুমার মণ্ডল (নোঙর), তৃণমূল বিএনপির এম সাব্বির আহমেদ (সোনালী আঁশ) এবং ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ইউনুছ আলী (মিনার)। প্রার্থীদের মধ্যে রণজিৎ কুমার রায় ও সুকৃতি মণ্ডল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় তাদের নামে ব্যালট ছাপা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই আসনে এনামুল হক বাবুলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জহুরুল হকের।
যশোর-৪ আসনে মোট ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৮৩৮ ভোটারের মধ্যে এবার নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৮৪৭ জন। সব মিলে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৭৯৮ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৬ জন। অভয়নগরে তিন ও বাঘারপাড়ায় একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।
উপজেলাভিত্তিক হিসাবে অভয়নগরে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৬ জন, বাঘারপাড়ায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ১১২ জন ও বসুন্দিয়া ইউনিয়নে ৩১ হাজার ২৬৮ জন ভোটার রয়েছেন।
সকাল থেকে পুরো নির্বাচনী এলাকায় সাজসাজ রব উঠেছে। তরুণ থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সব বয়সি নারী-পুরুষ ভোটারদের কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে দেখা গেছে।