1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
১৮ মাসেই নির্বাচন : না হলে সেনাশাসন - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণায় শ্যামনগরে আনন্দ মিছিল কুড়িগ্রামে হত্যা মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা সাজু গ্রেফতার জেপিসি কমিটির বিরুদ্ধে মুসলিমসহ ভিন্নমত দমনের অভিযোগ মহাকুম্ভে পুণ্যার্থীদের জন্য মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইমামবাড়ীর দরজা খুলে দিলেন মুসলিমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লড়াইয়ে রণক্ষেত্র ফুসরা গ্রাম, আহত ৮ ফাঙ্গিও-মসের চালানো মার্সিডিজ স্ট্রিমলাইনার বিক্রি হলো ৬৫০ কোটি টাকায় দাবি না মানলে রেললাইন ছাড়ব না, শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি শেখ হাসিনাকে এক শ কোটি টাকা ঘুষ দেয়া, সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য লেখনী ও চিত্রে বাংলা ভাষা আন্দোলন ও অমর একুশ রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকদের মাঝে চেক বিতরণ

১৮ মাসেই নির্বাচন : না হলে সেনাশাসন

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৮ জন খবরটি পড়েছেন
ছবি-ঠিকান

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত দৈনিক ঠিকানা থেকে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো

সালেম সুলেরী।। কড়া প্রহরায় নিউইয়র্কে অতিথি হয়েছেন ড. ইউনুস। স্মৃতির শহরে গড়েছেন নতুন ইতিহাস। জাতিসংঘের অধিবেশন চলাকালেই রাষ্ট্রপতি সকাশে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। জাতিসংঘে বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিতে গড়লেন মাহেন্দ্রক্ষণ। মুজিব-জিয়া-এরশাদের পর শীর্ষ বৈঠকে ড. ইউনূস। মার্কিন রাষ্ট্রপতি বাইডেন পেলেন অনন্য সাধারণ উপহার। ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের ‘গ্রাফিতি সংকলনে’ বিমুগ্ধ তিনি। স্বৈরাচারী সরকারকে হটাতে ছাত্রদের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের গল্প শুনলেন।
একই গল্প এবার শুনছে জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বিস্তারিত জানছেন বিশ্বেও আরও ১০ নেতা। গুরুত্ব পাচ্ছে স্বৈরাচারমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার মহাপরিকল্পনার কথাও।

নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস প্রথমবারের মতো সরকার-প্রধানরূপে এলেন। বিশ্বখ্যাত মানুষটির সাথে সাক্ষাতের জন্যে প্রায় সবাই উদগ্রীব। ফলে ড. ইউনূসের কারণে এবারের জাতিসংঘ যেনো ‘বাংলাদেশময়।’
মাইক্রোক্রেডিট ও ‘সোস্যাল বিজনেস’-এর প্রবক্তাকে ঘিরে বহুমাত্রিক উদ্দীপনা।
বিদেশে যখন উৎসব-সমীরণ, স্বদেশে তখন শোকের বাতাবরণ। অস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে গুলিতে নিহত তরুণ সেনাকর্মকর্তা তানজিম। ইতোমধ্যে মিডিয়ায় বোমা ফাটিয়েছেন সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান। বলেছেন, ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনী সরকার-ব্যবস্থাপনার কথা। অর্থাৎ সরকারের নির্বাচনী রোডম্যাপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পরদিনের ঘটনা। এমন ঘোষণায় বিএনপি, আ.লীগ ও ভারত মহাখুশি। তবে জামায়াত ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রশক্তি পড়েছে বিপাকে।
অন্যদিকে ৭৭তম জন্মতিথির প্রাক্কালে শেখ হাসিনাও ভীষণ মনমরা। জাতিসংঘে যোগদানের অছিলায় আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। 

মুজিব-জিয়া-এরশাদের পর প্রফেসর ইউনূস : বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ পেয়েছিলো ১৯৭৪-এ। তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. কামাল হোসেন বিশেষ তৎপরতা চালান। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম বক্তব্যও তিনি রাখেন। অতঃপর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলায় প্রথম বক্তব্য দেন। ১৯৭৪-এর ২৪ সেপ্টেম্বর তারিখটি বিশেষভাবে স্মরণীয়। ১৯৮০-এর ২৬ আগস্ট প্রেসিডেন্ট জিয়ার বক্তব্যের সূচনাটি ছিলো বাংলায়। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা বরাবর বাংলায় বক্তব্য দিয়েছেন। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সরকার-প্রধান হিসেবে প্রথম বক্তব্য দিচ্ছেন ড. ইউনূস। যুদ্ধবিগ্রহভরা পৃথিবীর শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ে আলোকপাত করছেন। ফলে শান্তিকামী পুরো পৃথিবীর চোখ এখন জাতিসংঘের পোডিয়ামে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এক বিরল ঘটনা। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। ১৯৭৪-এর পয়লা অক্টোবর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের সামনে পায়ের ওপর পা তোলা বঙ্গবন্ধু। মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সখ্যতা দেখে অবাক হয়েছিলো ভারত সরকার।
দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি করেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। ১৯৮০ সালের বৈঠকে আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব করেন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিশ্বখ্যাত এই নেতা পরে বাংলাদেশও সফর করেন। ওয়াশিংটন ডিসির ওভাল হাউজে দু’জনে দীর্ঘসময় কাটান। ১৯৭৮-এ বিএনপি প্রতিষ্ঠাকালে জিয়া বিস্তারিত জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।

তৃতীয় ও চতুর্থ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট জে. এরশাদ। ১৯৮৩-এর ২৫ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট রোনান্ড রিগ্যানের সঙ্গে। ১৯৯০-এ প্রেসিডেন্ট সিনিয়ার বুশ সকাশে। সেবার অ্যামেরিকার আহ্বানে সৌদি আরবে সৈন্য পাঠিয়েছিলেন তিনি। ইরাক কর্তৃক দখলকৃত কুয়েত উদ্ধারে ভূমিকা রাখেন।
অতঃপর বীরদর্পে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। সিনিয়র বুশের সামনে জে. এরশাদ পায়ের ওপর পা তুলে বসেন। সেই বিষয়টিও ভারতের নীতি-নির্ধারকেরা তীর্যক দৃষ্টিতে নিয়েছিলো। ঐ বছরের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন হয়।
প্রায় ২৪ বছর পর আবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। সাধারণত জাতিসংঘ অধিবেশনকালে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসে না আমেরিকা। কিন্তু প্রফেসর ইউনূসের কারণে প্রথাটি ভাঙা হলো। একটি ফুলকোর্স সভায় নেয়া হলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুতকরণে পাওয়া গেলো প্রতিশ্রুতি।

একইদিনে অসংখ্য সরকার প্রধানকে সাক্ষাৎ দিলেন ড. ইউনূস। কানাডার প্রধানমন্ত্রী, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট, সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন প্রমুখ। এছাড়াও শিডিউল কর্মসূচি তো রয়েছেই। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘের মহাসচিব, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। ইউএসএইড এ্যাডমিনিস্ট্রেটর, নেদারল্যান্ড-পাকিস্তান-নেপালের প্রধানমন্ত্রী। ইতালির প্রেসিডেন্ট, কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্স, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রমুখ।
এক কথায়, এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনের মধ্যমণি হলেন প্রফেসর ইউনূস। এবং সর্বাধিক আলোচিত দেশ ‘বাংলাদেশ’। জাতিসংঘ’র সদস্যপদ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি স্বর্ণোজ্জ্বল হয়ে থাকলো।

জন্মতিথিতে যুক্তরাষ্টে ঢুকতে শেখ হাসিনার চেষ্টা ব্যর্থ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মতিথি। শেষ ১৫টি বছর তা যুক্তরাষ্ট্রেই পালিত হয়েছে।
জাতিসংঘ অধিবেশনে বিশাল বহরসহ যোগ দিতেন। অধিকাংশবার প্লেন চার্টার করে জেএফকে বিমানবন্দরে নামতেন। নিউইয়র্কের অধিবেশনের পাশাপাশি যোগ দিতেন নাগরিক সংবর্ধনায়। জন্মতিথি উপলক্ষে নেতা-শুভান্যুধ্যয়ীদের দ্বারা সম্ভাষিত হতেন। জন্মদিনের প্রাক্কালে চলে যেতেন ওয়াশিংটন-সংলগ্ন ভার্জিনিয়ায়। সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়-এর প্রাসোদপম বাড়িতে উঠতেন। পরিবার ও নিকটজনদের সঙ্গে কাটাতেন আনন্দঘন সময়।
কিন্তু ২০২৪-এর জন্মতিথি এসেছে অমাবশ্যার অন্ধকার হয়ে। ভারতে অনেকটা শরণার্থী জীবন যেনো। দেশে প্রায় দেড়শটি হত্যা মামলার মালা। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ১ হাজার ৪২৫টি লাশের দায়। হাজার হাজার পঙ্গুত্ব, অন্ধত্ববরণকারীর অভিশাপ। কারাগারে অন্তরীণ স্ব-দলীয় তিন হাজার নেতা-কর্মীর আর্তনাদ!

জন্মতিথিতে ফের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চান শেখ হাসিনা। এজন্যে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি বলে দাবি তোলেন। প্রধানমন্ত্রী পদে এখনও বহাল বলে ঘোষণা দেন। প্রফেসর ইউনূস অবৈধ সরকার-প্রধান বলে প্রচারণা চালান। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগকে আন্দোলনে নামান। অচিরে বাংলাদেশে ঢুকবেন বলেও ঘোষণা দেন। ফলে দেশ-প্রবাসের কর্মীদের মধ্যে কিছুটা আলোড়ন ওঠে। শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘে যোগদানের দাবিও তোলা হয়। কিছু আন্ডারগ্রাউন্ড নিউজপোর্টাল সংবাদও প্রচার করে।
ভারতভিত্তিক পোর্টালগুলোর বরাতে ফেসবুকে প্রচারণা চলে। আ.লীগ এজেন্টরা ছড়াতে থাকেন সংশ্লিষ্ট বার্তা। শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যোগ দিচ্ছেন মর্মে মিষ্টিমুখ পর্বও চলে।
বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। ভিসা-পাসপোর্টহীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশ অসম্ভব। তাই শেখ হাসিনার আগ্রহকে অমূলক বলে জানানো হয়। বরং পরামর্শ দেওয়া হয় কৌশলে দল গোছানোর। অচিরেই নির্বাচনের ঘোষণা আসতে পারে বলেও জানানো হয়। 

ক্ষমতায় থাকতে ড. ইউনূসকে জেলে ঢোকাতে চেয়েছিলেন। অর্ধডজন মামলায় চূড়ান্ত হয়েছিলো একান্ত রায়। কিন্তু দৈবক্রমে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে যায়। ক্ষমতা হারিয়েও ইউনূস-বিরোধিতা অব্যাহত রেখেছেন। ড. ইউনুসের ‘নোবেল পুরস্কার বাতিলে’ চলছে কার্যক্রম। সংখ্যালঘু ও অন্যান্যদের হত্যার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। নোবেল কমিটির কাছে চিঠি যাচ্ছে ‘শান্তিপদক’ বাতিলের। এ বিষয়ে একটি ‘সিগনেচার ক্যাম্পেইন’ প্রকল্প চলছে। হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এতে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছেন নেতা-কর্মী, সমর্থকদের। 
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা হত্যায় নোবেল শান্তিপদক হারান অং সান সুকি। একই কায়দায় হাসিনাবাদীরা ড. ইউনূসকেও কাঁদাতে চান।
এ বিষয়ে ইউনূসপন্থীরাও বসে নেই। পাল্টা স্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচির উদ্যোগ চলছে। তাদের মতে, হাসিনাকৃত ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করা হবে। ‘সোস্যাল বিজনেস ও থ্রি জিরো থিওরি বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। সেসবের জন্যে ড. ইউনূস পুনর্বার নোবেল পেতে পারেন।

প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শক-সভার গোপন পরামর্শসমূহ : বাংলাদেশ ত্যাগের আগে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈঠক করেন ড. ইউনূস। নিজস্ব একটি পরামর্শক সভার মতামত নেন। তাতে দেশের অশান্ত পরিস্থিতির ওপর পর্যালোচনা চলে। যথা পাবর্ত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালি বিরোধ। গার্মেন্টস সেক্টরে বকেয়া বেতন বিষয়ে সিরিজ আন্দোলন। দেশব্যাপী দখল, চাঁদাবজি ও মব-ক্রাইম। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রশক্তিতে শিবির নেতাদের আধিক্য, গোপনীয়তা। মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসবের ব্যাপক প্রচার।

অন্যদিকে সরকারের কিছু সাফল্যও রয়েছে। অর্থনৈতিক ও রিজার্ভ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন। বিদ্যুৎ খাতের বিশাল ভর্তুকি মোচন ও বকেয়া নগদায়ণ। সংস্কারের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি কমিশন গঠন। আদালত খাতে যোগ্যদের যথাযথভাবে পদায়ন। অর্থ আহরণে দাতা ও প্রবাসীদের উৎসাহ প্রদান।

পরামর্শক সভার মতে, এসবেব তেমন প্রচার নেই। তাদের মতে, ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘতর করা বোকামি। রাজনীতি ও বিপ্লব-প্রধান দেশ বাংলাদেশ। এটিকে চালাতে চৌকষ ও কৌশলী রাজনীতিক হতে হয়। শুধু সামরিক শক্তির মহড়া দিয়েও সুশাসন সম্ভব নয়। পরামর্শক সভার মতে, এতো সংস্কার দিয়ে কি হবে। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার কি লালন-পালন করবে। বরং সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নিজেদের মতো সংস্কার করে নেবে। মহামুজিবের প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি টেকেনি। একদলীয় শাসনের ‘বাকশাল’ও বিদায় নিয়েছে। ঐতিহাসিক থিওরি #৩৯, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির বিলোপ ঘটেছে। এখনকার সংস্কার পরে কি হবে- কে বলতে পারে।
পরামর্শকসভা মোটাদাগে কিছু সংস্কারের প্রস্তাব করে। কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতির পুনঃপ্রতিষ্ঠা। দুই টার্মের বেশি প্রধানমন্ত্রিত্ব নয়। ৭০ অনুচ্ছেদের অবসান, ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা। চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দুই বছর। পরামর্শকসভার মতে, সম্মানসমেত উপদেষ্টা পরিষদের বিদায় নেয়া উচিৎ। ছাত্রশক্তির চাহিদামতো দীর্ঘমেয়াদ- বিপদ ডাকতে পারে। ৮৪ বছরের প্রধান উপদেষ্টার ওপর কাজের চাপ অতিরিক্ত। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে বরং নিরিবিলি রাষ্ট্রপতি হওয়া ভালো।

১৮ মাসেই নির্বাচন : না হলে সেনাশাসন : বিপাকে জামায়াত ও কিংস পার্টির উদ্যোক্তারা : বাংলাদেশ ছাড়ার প্রাক্কালে প্রধান উপদেষ্টা সময় দেন সেনাপ্রধানকে। পরামর্শকসভার পর্যালোচনার আলোকে বসেন বৈঠকে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করেন। হাসিনা সরকারের পতন ও পবরর্তী পরিস্থিতিতে সেনা-ভূমিকার প্রশংসা করেন। জাতিসংঘ মিশনে কর্মরতদের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। সাত হাজারকে দশ হাজারে নিতে হবে বলে মত দেন। জতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস সমীপে আলোচনার আশ্বাসও দেন।

পরদিন রয়টার্সকে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার দেন সেনাপ্রধান। জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান পরোক্ষভাবে ‘নির্বাচনী রোডম্যাপ’ দেন। বলেন, ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনী সরকারের পথে যাওয়া ভালো।
সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যকে সচেতনমহল গঠনমূলক বলছেন। বিএনপি এবং আওয়ামী মহল বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। নির্বাচনী মাঠ পেলে আ.লীগ কিছুটা শ্বাস নিতে পারবে। অন্যদিকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে মাঠ গোছাচ্ছে বিএনপি। কিন্তু বিপাকে পড়েছে প্রস্তুতিরত ‘কিংস পার্টি।’ 

কিন্তু সেনাপ্রধানের বক্তব্যে হতাশ জামায়াতে ইসলামী। বিপুল সংস্কারের মাধ্যমে ধীরে সুস্থে নির্বাচনের কথা বলেছে।
জামায়াতের প্রধান সমস্যা নির্বাচনী নিবন্ধন নেই। ২০১৩-তে উচ্চ আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়েছে। ফলে সাংগঠনিক কার্যক্রম থাকলেও দলভিত্তিক নির্বাচন সম্ভব নয়। ২১ অক্টোবর আপীল বিভাগে একটি শুনানি আছে। ফুলবেঞ্চে শুনানি বিষয়ে অনুমোদন প্রাপ্তির মামলা। এতে রায় পক্ষে এলেও নির্বাচনী নিবন্ধন পেতে কয়েক ধাপ। সেক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে ধারণা। ফলে, হুট করে নির্বাচন দেয়ার পক্ষে নয় জামায়াত। দৈনিক ঠিকানা

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews