1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
আশুরার দিন রোজা কেন রাখবেন? হাদীস ও ইতিহাস বলছে যা - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন

আশুরার দিন রোজা কেন রাখবেন? হাদীস ও ইতিহাস বলছে যা

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
  • ২৭ জন খবরটি পড়েছেন

ইসলামী ডেস্ক।

ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন হল আশুরা, যা হিজরি বর্ষের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখে পালিত হয়। এই দিনটি রোজা রাখার জন্য বিশেষভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে এই দিনে রোজা রাখতেন এবং তাঁর উম্মতদেরও তা পালনের জন্য উৎসাহিত করতেন। হাদীস ও ইতিহাসের আলোকে আশুরার রোজা এক অনন্য মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত হিসেবে গণ্য।


আশুরার রোজার ফজিলত – হাদীস দ্বারা প্রমাণিত-
আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: “আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গুনাহ মোচনের কারণ হয়।”— (সহিহ মুসলিম: হাদীস ১১৬২)
এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, আশুরার দিন রোজা রাখা এক বছর যাবৎ ছোট গুনাহসমূহের কাফফারা বা মোচনের উপায়।


ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট-
আশুরা দিনের গুরুত্ব ইসলামের আগমনের আগেই বিদ্যমান ছিল। হাদীস অনুযায়ী:
১। মদীনায় হিজরত করার পর রাসূলুল্লাহ (সা.) দেখতে পান যে ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা রাখে। কারণ এই দিনে আল্লাহ মূসা (আ.) ও তাঁর অনুসারীদের ফেরাউন থেকে মুক্তি দেন।
২। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
“আমরা মূসার (আ.) প্রতি তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার।”
এরপর তিনি নিজেও রোজা রাখেন এবং সাহাবিদেরও তা রাখার নির্দেশ দেন।
— (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)


রোজা রাখার নিয়ম ও সুন্নত অনুসরণ-
রাসূলুল্লাহ (সা.) আশুরার রোজার সঙ্গে নবম মহররম (তাসু’আ) অথবা একাদশ মহররম যুক্ত করে রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে মুসলমানরা ইহুদিদের অনুকরণ না করে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
“তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখো এবং তার এক দিন আগে বা পরে রোজা রাখো।”
— (মুসনাদ আহমদ: হাদীস ২১৫৪)
সুন্নত হলো:
ক। ৯ ও ১০ মহররম
অথবা
খ। ১০ ও ১১ মহররম
অথবা
গ। ৯, ১০ ও ১১ মহররম – তিন দিন রোজা রাখা


আত্মশুদ্ধির শিক্ষা ও আত্মত্যাগের প্রতীক-
আশুরার আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো — এ দিনেই ঘটেছিল কربলা যুদ্ধ, যেখানে নবীজির দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সত্য ও ন্যায়ের পথে শহীদ হন। যদিও আশুরার রোজার বিধান কربলার ঘটনার বহু পূর্ব থেকেই রয়েছে, তবুও এই দিনের আত্মত্যাগ মুসলিমদের জন্য এক অনন্য প্রেরণার উৎস।


আশুরা উপলক্ষে কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা-
ক। অনেকে মনে করেন আশুরার রোজা রাখা ফরজ; এটি সঠিক নয়। এটি নফল (ঐচ্ছিক) রোজা, তবে এর ফজিলত অনেক বেশি।
খ । এই দিনে বিশেষ কোনো খাবার রান্না করা বা কোনো সামাজিক আচার পালন করা ইসলামি শরিয়তের নির্দেশ নয়।


উপকারিতা ও আত্মিক প্রভাব –
১। পাপ মোচন ও আত্মশুদ্ধি
২। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন
৩। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যম
৪। আত্মসংযম ও ধৈর্য চর্চার সুযোগ


উপসংহার
আশুরার রোজা ইসলামে একটি বিশেষ ফজিলতপূর্ণ আমল। এটি শুধুমাত্র অতীত গুনাহ মোচনের উপায়ই নয়, বরং একজন মুমিনের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর রহমত পাওয়ার এক দুর্লভ সুযোগ। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণে এবং ইতিহাসের প্রেরণায় এ রোজা পালন সত্যিই এক মহা ইবাদত।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews