মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক জানিয়েছেন, সারাদেশ থেকে ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৪০ হাজার ডাটা ইতোমধ্যে এন্ট্রি হয়েছে, বাকী ৫০ হাজারের ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে। যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক বাণিজ্য মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় তৈরি হচ্ছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ এখন দলীয় রাজনীতির রঙে রঙিন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি গেজেটে যাদের নাম আছে, তাদের সংখ্যা ৬ হাজার ৭৫৭ জন। এর মধ্যে ভাতা পাচ্ছেন ৫ হাজার ৩৫৮ জন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। বাকী ১ হাজার ৩৯৯ জন পরিবার এখনো আবেদনই করেনি। কেন তারা ভাতা গ্রহণ করছেন না—তা রাষ্ট্রের জানা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাদের খুঁজে বের করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ফারুক ই আজম বলেন, “আমি ২২ বছর বয়সে যুদ্ধ করেছি বিবেকের তাড়নায়, রাজনৈতিক দলের কর্মী হয়ে নয়। আমাদের স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতা, মর্যাদা ও অর্থনৈতিক মুক্তি।”
তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্মের চেতনার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার চেতনার বড় ফারাক রয়েছে। আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনেক সময়ই কেবল রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কাজ করছে। এটি বাস্তবায়িত হলে মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার ইতিহাসের অবসান ঘটবে বলে মনে করেন তিনি।