অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি।।
আগামী ১০ জুলাই পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন যশোরের অভয়নগরের বিভিন্ন স্থানের কামারশালার কারিগররা। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। লোহার আওয়াজ, হাপরের ফোঁসফাঁস আর হাতুড়িপিটার টুংটাং শব্দে মুখর এখন কামারপাড়া।
সরেজমিনে অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, হাপর দিয়ে কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে লাল করে ছোট-বড় নানা আকারের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ছুরি, বটি, দা, চাপাতি ইত্যাদি। নতুন অস্ত্র বানানোর পাশাপাশি পুরনো অস্ত্র শান দেওয়ার কাজও করতে হচ্ছে সমানতালে । ক্লান্তহীনভাবে চলছে কাজ, কথা বলার ফুরসত নেই কারো। শেষ সময়ে এসে কারিগররা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দা, বটি, ছুরি, চাপাতি তৈরিতে। এত পরিশ্রমেও তাদের মুখে ফুটছে হাসি। এ উপার্জনই হয়তো অনেকের সারা বছরের আহারের যোগান হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানের কামারশালায় সারা বছরই লোহার তৈরি দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, কোদাল, কুড়াল, কাঁচি পাওয়া যায়। তবে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পুরনো যন্ত্রপাতিতে বেড়েছে শানের কাজ। লোহার তৈরী এসব বিক্রেতারা জানান, পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, দা ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০ থেকে ১০০ টাকা , চাপাতি ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অন্য বছরের তুলনায় এবছর দা, বটি, ছুরি, চাপাতির দাম একটু বেশি।
নওয়াপাড়া পৌরসভার ফারাজী পাড়ার বিপ্লব কর্মকার জানান, ঈদ এলে আমাদের কেনাবেচা বেড়ে যায়। ঈদের দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে থেকে কাজের চাপে দম ফেলার অবস্থা থাকেনা। তবে শানের কাজ বরাবরই বেশি। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
উপজেলার বেঙ্গল গেট এলাকার সুমন কর্মকার জানান, এ মুহূর্তে কারিগর সংকট। এ পেশায় এখন কেউ আর আসতে চায় না। ঘাটের লেবার দিয়ে কাজ করাতে হয়। গতবছরের তুলনায় এবছর কেনা বেচা কম। এ বছর চায়না স্টিলের সরঞ্জাম কিনছে অনেকে। তবে তাদের চেয়ে ভালো মানের জিনিস তৈরি করছেন তারা। ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে এসে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় খুুশি তারা। বর্তমানে এ পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে সকলে সরকারি সহযোগিতা কামনা করছেন। তারা বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব।